রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনি
গুরুতর আহত অবস্থায় রেজাউল খানকে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত রেজাউল খান বাদী হয়ে ৭ জুন মঙ্গলবার বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরে এজাহারভূক্ত না হওয়ায় ৮ জুন বুধবার বরিশাল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
ওই মামলার আসামীরা হলেন উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার গ্রামের আ. ছালেক সরদার (৫৫),তার দুই ছেলে রহিম সরদার (২৫) ও আ. রহমান সরদার (৩০),ভাতিজা বাবুল সরদার (৪০) ও বাদল সরদার (৩৫), স্ত্রী শহুরী বেগম(৪৫),পুত্রবধু আকলিমা (২৮) ও ভ্রাতুষপুত্র বধু রেখা বেগম (৩০)। জানা গেছে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের আউয়ার গ্রামের রেজাউল খানের সঙ্গে একই বাড়ির উক্ত আসামীদের সঙ্গে ধীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এর ধারবাহিকতায় ৬ জুন বেলা ১১টার দিকে আসামীরা বাড়ির উঠানে বাদী রেজাউল খানকে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। এসময় ছেলেকে রক্ষা করতে গিয়ে রেজাউলের বিধবা মা জায়েদা বেগম (৬০) হামলার শিকার হয়ে আহত হন। প্রতিবেশীরা গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন।
ওই দিন দিনভর আসামীরা রেজাউলকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে বাড়ির মধ্যে লোহার রড নিয়ে মহড়া দেয়। ফলে ভয়ে রেজাউল গৃহবন্দি হয়ে পড়েন । ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে তিন টার দিকে দুর্বৃত্তরা রেজাউলের ঘরের সামনের ও পিছনের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তার ডাক চিৎকার শুনে তার পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া স্থানীয় মধ্য আউয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লুৎফর রহমান সুমন ও তার স্ত্রী সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সুমাইয়া আক্তার শ্রাবন্তীসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার ও নিজেদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। আগুন নিভাতে গিয়ে রেজাউলের ফুফু ফরিদা বেগম (৬০) আহত হন। অগ্নিকান্ডে রেজাউল খান প্রাণে বেঁচে গেলেও স্বর্নালঙ্কার, খাদ্যসামগ্রী ও আসাবপত্রসহ তার বসতঘর পুড়ে যায়। রেজাউলের শিশু পুত্রসহ স্ত্রী পার্শ্ববর্তী করফাকর গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় ও মা অন্য ঘরে থাকায় তারা রক্ষা পান।
এছাড়া বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা আগুন নিভাতে ব্যর্থ হলে ওই বাড়ির ৩৫ ঘরে আগুন ছড়িয়ে পরে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারতো। এদিকে রেজাউল খান ও তার পরিবারের অভিযোগ জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছে। অবশ্য আসামীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(ঊষার আলো-এফএসপি)