রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের বানারীপাড়ায় উপজেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ হুমায়ুন কবিরের নির্মম হত্যার ৮ম বার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই জাসদ নেতা রোজাদার সৈয়দ হুমায়ুন কবিরকে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে ধারালো অস্ত্র,ইট ও হাতুড়ি দিয়ে কুপিয়ে,পিটিয়ে,অন্ডকোষ থেতলে,শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পেরেক ডুকিয়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তৎকালীণ দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন সুনির্দিষ্ট ও ৫/৬জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে নিহত কবিরের ভাই সৈয়দ তরিকুল ইসলাম আপনূর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২৩ অক্টোবর এ হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সলিয়াবাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মিন্টু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু সহ ১০ আসামীর বিরুদ্ধে থানার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সঞ্জিত চন্দ্র শীল বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগ পত্র(চার্জশীট) দাখিল করেন। মামলাটি বর্তমানে বরিশাল জেলা যুগ্ম জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলার চার্জশীটভূক্ত প্রধান অসামী সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু সদ্য অনুষ্ঠিত চাখার ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে দ্বিতীয়বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ১৩ জুলাই শপথ নিয়েছেন। ১৫ জুলাই তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে হত্যা মামলার বাদী সৈয়দ তরিকুল ইসলাম আপনূর বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মামলার আরেক আসামী জিয়াউল হক মিন্টুৃ গত ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত বানারীপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী হওয়ায় তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এদিকে জীবন সায়হেৃ দাঁড়ানো তার অশীতিপর বৃদ্ধা মা ফিরোজা বেগম নাড়ি ছেড়াধন প্রাণপ্রিয় ছেলের ঘাতকদের ফাঁসি কার্যকর দেখে মরতে চান। গত ৮ বছর ধরে নিহত ছেলের জন্য তার চোখে কান্নার সাঁতার। এদিকে চার্জশীটভূক্ত আসামী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকুকে নৌকার টিকিট দেওয়ায় শুরু থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাসদে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। টুকুসহ ওই হত্যা মামলার সকল আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মামলার বাদী সৈয়দ তরিকুল ইসলাম আপনুর এবং তার অশীতিপর বৃদ্ধা মা ও ভাই-বোনসহ জাসদ নেতা-কর্মীরা বানারীপাড়া পৌর শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং বরিশালে টাউন হলের সামনে মানববন্ধন করেছিলেন। তখন বানারীপাড়া ও বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় আসামীদের ছবির গলায় ফাঁসির দড়ি দেওয়া পোষ্টার সাঁটানো হয়। এছাড়া ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনেও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।