নারী নের্তৃত্ব হারাম বলে রাষ্ট্র ও সংবিধান বিরোধী বক্তব্য দিয়ে নারী সমাজকে অপমান ও অসম্মান করার প্রতিবাদে সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারকে অপসারণ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে মোংলা উপজেলা নারী সমাজ।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় পৌর মার্কেটের সামনে পৌর মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান মিসেস কামরুন্নাহার হাই’র সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমান চেয়াম্যান ইকরাম ইজারাদার গত ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের পক্ষ নিয়ে নারী নের্তৃত্ব হারাম বলে রাষ্ট্র ও সংবিধান বিরোধী বক্তব্য দিয়ে নারী সমাজকে অপমান ও কলুষিত করেছেন। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, মহান সংসদের স্পিকার একজন নারী তাছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নারীরা অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন রাষ্ট্রে নারীরা নের্তৃত্ব দিচ্ছে। তিনি সেই নারীর অধিনেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিনা প্রতীদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হন সেখানে কিভাবে তিনি নারীদের অসম্মান করে কথা বলেন। আমরা জানতে চাই তিনি জামায়াত, বিএনপি, জাসদ নাকি আ’লীগের চেয়ারম্যান? আমরা এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার কে দ্রুত অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এ সময় বক্তব্য দেন, সোনাইলতলা ইউপি চেয়ারম্যান নাজরিনা বেগম নারজিনা, মোংলা পোর্ট পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জাহানারা হোসেন চাঁনু, শিউলি আকন, জোহরা বেগম, মহিলা আ’লীগ নেত্রী রাহিলা খানম বেবীসহ নারী নেত্রীরা।
উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মো: তারিকুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, পৌর আ’লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম, সুন্দরবন ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ কবির উদ্দিন, আ’লীগ নেতা আলহাজ্ব শেখ আ: সালাম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান মো. একরাম ইজারাদার তাঁর ইউনিয়নে ঈগল প্রতীকের এক সভায় বলেন, ‘আমরা গজবের ভেতর নিমজ্জিত আছি। এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। জনমনে কোনো স্বস্তি নেই, শান্তি নেই; তার কারণ, নারী নেতৃত্ব হারাম। নারী নেতৃত্বের অধীনে আমরা এখানে রয়েছি। আমাদের ভোটটা আমরা বেগম হাবিবুন নাহারকে (আওয়ামী লীগের প্রার্থী) দুইবার (ভোট) দিয়ে আমরা নারী নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করছি। তাই আমাদের এখানে কোনো সুখ-শান্তি অবস্থান করে না। যেটা সত্য, সেই কথা আমি এখানে আপনাদের কাছে বলে গেলাম। উনি একজন নারী, উনি রাজনীতি আর সমাজনীতির বোঝেন কি? কিছুই বোঝেন না।’ এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।