UsharAlo logo
রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধে ষড়যন্ত্র: বাংলাদেশকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে

usharalodesk
জুন ১০, ২০২৩ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাসহ অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে শুধু মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে সরকার। আশ্রয় শিবিরগুলোয় যারা অবস্থান করছেন, তারাও দ্রুত নিজেদের ভিটায় ফিরতে চান।

সর্বশেষ বাংলাদেশকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মিয়ানমারের পরিস্থিতিবিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস। বিষয়টি উদ্বেগজনক।

প্রত্যাবাসন নিয়ে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিতের দাবিতে বৃহস্পতিবার উখিয়া ও টেকনাফের অন্তত ১৩টি ক্যাম্পে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন রোহিঙ্গারা। এ সময় রোহিঙ্গা নেতারা জাতিসংঘ কর্তৃক রেশন কমিয়ে দেওয়া এবং স্বদেশে ফিরতে আগ্রহীদের রেশন বন্ধ করার মতো রহস্যজনক পদক্ষেপের নিন্দা জানান। একইসঙ্গে তারা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন।

লক্ষণীয়, আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গারা শুরু থেকেই নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও চলাচলে স্বাধীনতা নিশ্চিতের মাধ্যমে দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু মিয়ানমারের প্রশাসন যেমন প্রত্যাবাসনে আন্তরিক নয়, তেমনি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখন নানা সংকটের কারণ দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে। সাহায্য-সহযোগিতার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে উলটো তাদের এখন বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চাচ্ছে, যা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। একটি স্বাধীন দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৈামত্বের বিবেচনায় এর পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ।

মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শরণার্থীবিষয়ক কোনো আইন বা কনভেনশনে অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র নয়। রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসাবে গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিতেও বাধ্য নয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই। শুধু মানবিক কারণে এই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। দেশে বিপুল জনসংখ্যার চাপ থাকা সত্ত্বেও সরকার মানবিক কারণে যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিতও হয়েছে।

তবে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যদি রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারকে বোঝাতে কিংবা চাপ প্রয়োগে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ ছাড়া বাংলাদেশের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা থাকবে না।

ঊষার আলো-এসএ