রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল): বিয়ের পর ‘ফুলশয্যার’ ‘বাসর রাত’ নিয়ে সবাই অন্তহীন স্বপ্নের জাল বুনেন। সবার জীবনে স্বর্গ সুখের এ রাত নিয়ে স্বপ্ন ও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কিন্তু মধুময় বাসরের সেই রাত যদি লঞ্চের ছাদে খোলা আকাশের নিচে কেটে যায় তবে এর চেয়ে স্বপ্নভঙ্গ ও বেদনার রাত আর কি হতে পারে। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে বরিশালের উজিরপুরের এক নবদম্পতির জীবনে। যা তাদের মানসপটে চিরকাল ভেসে থাকবে । বিয়ের পর ঢাকায় যাওয়ার জন্য লঞ্চে কেবিন না পাওয়ায় নতুন বউকে নিয়ে লঞ্চের ছাদে করেই ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন এ নব দম্পতি।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে রাখা ঢাকা-বরিশাল রুটের ঢাকাগামী পারাবত-১০ লঞ্চের ছাদে এ চিত্র দেখা যায়। এ সময় সেখানে অন্য যাত্রীরা জড়ো হতে থাকে। নবনিবাহিত রাসেল উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের বাসিন্দা । তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান পদে কর্মরত। নববধূ সোনিয়া আক্তারও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। রাসেলের বোন পারভিন বলেন, বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিলো গত ঈদ উল ফিতরের সময়। কিন্তু তখন লকডাউন পড়তে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে কোরবানির ঈদে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। উভয়ের পরিবার ভেবেছিলো ১৪ দিনের লকডাউনের পর ঈদে আর লকডাউন হবে না। লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসার পর অনেকেই জানায় শনিবারের পর লকডাউন হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা নিশ্চিত হয়ে আকদ অনুষ্ঠান করে খাবারের আয়োজন ব্যতিরেকে নতুন বউ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
তিনি বলেন, এতে যেতে অনেক কষ্ট হবে, তবে কিছু করার নেই। বর রাসেল বলেন, লঞ্চে কেবিন পেতে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ফলে বাধ্য হয়ে লঞ্চের ছাদে খোলা আকাশের নিচে যেতে হচ্ছে। তবে এটাও একটা অন্যরকম অনুভূতি। যা মানসপটে চিরকাল ভেসে থাকবে।