UsharAlo logo
সোমবার, ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার ইস্যুতে দলের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে জামায়াত: তাহের

ঊষার আলো রিপোর্ট
মে ১৮, ২০২৫ ১:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংস্কার কমিশনের প্রসেস এবং ইস্যুতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নয় দেশ ও জাতীয় স্বার্থে সকলের কল্যাণ জামায়াতে ইসলামী বিবেচনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

শনিবার (১৮ সে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

জামায়াতের নায়েবে আমির আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, কোনো কোনো ইস্যুতে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন আগে পাবনা আটঘরিয়া এলাকায় জামায়াতের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এখনও নির্বাচনের তারিখই হয়নি, কিন্তু জায়গা এলাকা দখলের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগামী নির্বাচনও একেবারে সঠিক ও সুস্থ হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সংস্কার ইস্যুতে দলের চেয়ে জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জামায়াত জানিয়ে মো. তাহের বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রসেস এবং ইস্যুতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে নয় দেশের স্বার্থে জাতীয় স্বার্থে সকলের কল্যাণে জামায়াতে ইসলামী বিবেচনা করছে। এ কারণেই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যেগুলো উত্তম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সেখানে প্রয়োজনে আমরা আমাদের মত চেঞ্জ করে ঐক্যমত্য পোষণ করেছি। আমরা যখনই বুঝতে পেরেছি আমাদের যে সিদ্ধান্ত বা চিন্তা তার চেয়ে আরো বেটার হতে পারে দেশ ও জাতির জন্য। তখনই আমরা পরিবর্তন আনছি। কারণ একটাই আমাদের লক্ষ্য কিন্তু দলীয় নয় জাতীয় অর্জন।

তিনি বলেন, গত আলোচনার পর ইতোমধ্যেই দেশে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। এবং কারো কারো বিবেচনায় বিশ্লেষণ হচ্ছে এর পেছনেও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র আছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশই হচ্ছে নানামুখী এসব আনরেস্ট তৈরি করার একটি প্রক্রিয়া। আমরা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের নিন্দা জ্ঞাপন করছি।

তিনি বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা যেন আরো দৃঢ়তা এবং সঠিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। সরকারের সমস্ত পজিটিভ কাজে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জামায়াতের এ শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, সমস্ত রিফর্ম কমিটির মাধ্যমে আমরা যে বিষয়গুলো বের করে আনার চেষ্টা করছি, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচন। নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সন্ত্রাসমুক্ত হয় এটি আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ আজকে বাংলাদেশ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তার জন্য সবচেয়ে বেশি অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে গত তিনটি নির্বাচনের নামে প্রহসন। বাংলাদেশকে যদি এথেকে বেড়িয়ে আসতে হয়, একেবারে একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু অবাধ জাতীয় নির্বাচনই এর সমাধান।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট একটি তারিখ বা টাইমলাইন না থাকার কারণে রাজনৈতিক দল গুলোর ভিতরেও নানারকম অস্থিরতা কাজ করছে। এজন্য আমি জাতীয় ঐক্যমুক্ত কমিশনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা অনেক পরিশ্রম করছেন সেজন্য ধন্যবাদ। আপনার টানা আলোচনা করে যাচ্ছেন। তবে আমি মনে করি এখানে খুব বেশি সময় না নিয়ে আমাদেরকে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে সমস্ত ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়েই একটা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা দরকার। এবং এরপরে যত শিগগিরি সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করা দরকার।

ঐক্যমত্য কমিশনের আলোচনায় উপস্থিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাহের বলেন, আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা করা উচিত যে ব্যবস্থায় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে সঠিক হবে। এটার জন্য যা যা করা দরকার যদি শক্ত হতে হয় তাহলে শক্ত হতে হবে। কারণ নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কিছুটা প্রশ্নবোধক মনে হচ্ছে উল্লেখ করে তাহের বলেন, কিছু কিছু ঘটনায় নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতে পারছে না। সেক্ষেত্রেও সরকারকে অনুরোধ করবো, বিষয়টি যেন খেয়ার রাখা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠক জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিশন সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের নেতৃত্বে দলটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি(ভারপ্রাপ্ত) এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

ঊষার আলো-এসএ