ঊষার আলো রিপোর্ট : ৫ আগস্টের পর ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু জুলুমের পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম শায়েখে চরমোনাই বলেছেন, জুলুম, অত্যাচার, চাঁদাবাজি ও বৈষম্য দূর করার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম বৈষম্য দূর করতে পারলে আমরা মুক্তি পাব। কিন্তু আমরা কি দেখলাম! আবারও সেই চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অন্যায়-অবিচার, দখলদারি, আবারো নির্বিচারে হত্যা। এর জন্য মানুষ জীবন দেয়নি, রক্ত দেয়নি।
শুক্রবার বিকালে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের আয়োজনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও সখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটা কথা বলতে চাই, যেমনিভাবে তেঁতুল গাছ লাগিয়ে আমের আশা করা যায় না, মাদার গাছ লাগিয়ে আমের আশা করা যায় না। তেমনিভাবে চোরের মাধ্যমে চুরিমুক্ত দেশ হতে পারে না, জালেমের মাধ্যমে জুলুমমুক্ত দেশ হতে পারে না ও দুর্নীতিবাজের মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হতে পারে না। এসপি ও ডিসি সাহেব পরিবর্তন হয় ঘুস পরিবর্তন হয় না। ব্যক্তি পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু আদর্শ ও নীতি পরিবর্তন হয় নাই।
তিনি আরও বলেন, যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ হন তাহলে আগামীর বাংলাদেশে এমন এক সূর্য উদিত হবে যেখানে বৈষম্য থাকবে না, জুলুম থাকবে না, অত্যাচার থাকবে না, অবিচার থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে। যেখানে সব শ্রেণির মানুষের অধিকার থাকবে না। আর সেই বাংলাদেশ হলো ইসলামী বাংলাদেশ। ইসলাম ব্যতীত বার বার দল ও নেতা পরিবর্তন করবেন, কিন্তু দুর্নীতি পরিবর্তন করতে পারবে না।
নতুন নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, যারা নতুন নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন তাদেরকে বিগত নির্বাচন কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যদি আপনি ভালো এক নির্বাচন উপহার দিতে না পারেন তাহলে বাংলাদেশের জনগণ কোনো অবস্থাতেই আপনাদের ক্ষমা করবে না। বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষ, নির্দলীয় ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন চায়। যেই নির্বাচনে প্রত্যেকটা মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। যাকে পছন্দ করবে তাকে যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনকে করতে হবে।
এ সময় তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের পাশাপাশি ভোলার গ্যাস দিয়ে বরিশাল বিভাবে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার দাবি জানান। একই সঙ্গে ভোলা-বরিশাল সেতুরও দাবি করেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলা তরিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. সিরাজুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা ওবায়েদুর রহমান বিন মোস্তফা। এছাড়া সংগঠনটির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
গণসমাবেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থিতরা দুপুর থেকে মিছিল নিয়ে সমবেত হন।
ঊষার আলো-এসএ