UsharAlo logo
বুধবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অটোমেশনের আওতায় আসছে খুবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার

usharalodesk
মে ২৮, ২০২৩ ৮:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্কঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজেশন করার চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অটোমেশনের আওতায় আসছে কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। ইতোমধ্যে অটোমেশন কাজের প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ কাজ শেষে শীঘ্রই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আসবে। এটি ব্যবহার করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও শিক্ষাব্যবস্থা সহজতর হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে গ্রন্থাগারিক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মোঃ সারওয়ার জাহান বলেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর একান্ত আগ্রহ ও সার্বিক সহযোগিতায় কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার অটোমেশনের আওতায় আসছে। অটোমেশন কাজের প্রথম ধাপে রয়েছে- ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৮৫ টাকা ব্যয়ে কোহা, মার্ক-২১ নামক সফটওয়্যারের মাধ্যমে ৫০ হাজার বইয়ের ডাটাবেজ তৈরি এবং আনুসঙ্গিক ডিভাইস ক্রয় ও স্থাপন। এ ধাপে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপন কাজের অগ্রগতি ২০ শতাংশ এবং ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মেইনগেট রেনোভেশন, ডেকোরেশন, পিজিয়ন হোল তৈরি, কম্পিউটার ল্যাব তৈরি, টেরেস রেনোভেশন কাজের ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার অটোমেশন হলে ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ সহজে ও দ্রুত চেক-ইন, চেক-আউট, বুক সার্চিং, সেলফ্-বুক ইস্যু, সেলফ্ বুক রিটার্ন, অটো গেট পাশ, বুক হোল্ডিং, রিপোর্টিং ইত্যাদি সুবিধা পাবেন। তাছাড়াও রিমোট এক্সেস এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সংগ্রহ সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং ঘরে বসে ই-জার্নাল ব্রাউজ, ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করতে পারবেন।

এছাড়া কম্পিউটার ল্যাবের মাধ্যমে ৪০টি পিসিতে একসাথে ৪০ জন শিক্ষার্থী তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি গ্রন্থাগারে রক্ষিত বুক সার্চিং এবং ই-বুক, ই-জার্নাল ব্রাউজ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। এছাড়া এই ল্যাব বিভিন্ন পেশাগত ট্রেনিং, মিটিং, সেমিনার ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা যাবে। রিসার্চ ক্যারেল ডেস্ক এর মাধ্যমে গ্রন্থাগারে শিক্ষক ও গবেষকদের শিক্ষা ও গবেষনার জন্য নেট লাইনসহ ১০টি ডেস্ক রয়েছে, যেখানে বসে লাইব্রেরির সাবস্ক্রাইবকৃত ই-বুক, ই-জার্নাল ব্রাউজ, ডাউনলোড ও পারবেন। এই লাইব্রেরিতে ইমারাল্ড, জেস্টোর, আইইইই, লাই-কব (লাইব্রেরি কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশ)সহ বিভিন্ন ই-বুক ও ই-জার্নাল সাইট ব্যবহার করা যাবে। এখানে নন-একাডেমিক বুক সেকশনে আইএলটিএসসহ বিভিন্ন ধরনের নন-একাডেমিক ও অন্যান্য বই সংরক্ষণ করা হয়েছে। যার বর্তমান কপি সংখ্যা ২৭২টি।

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে “বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ” নামে একটি কর্নার রয়েছে। বর্তমানে এই কর্নারে ১২১৮ শিরোনামের ৩০৪৬ কপি বই রয়েছে। যাদের মধ্যে হাতের লেখা সংবিধানের মুদ্রিত ভার্ষণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সম্পাদিত ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধু এবং চার জাতীয় নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের আত্ম-উৎসর্গকারী, বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলন, দেশবরেণ্য বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীর উপর বই, পোট্রেট, স্কেচ, আলোকচিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধকালের দুর্লভ ছবি এই কর্নারে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া আর্কাইভস কর্নারে বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সংরক্ষণ করা হয়। এখানে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা ফ্রি ওয়াইফাই সেবা গ্রহণ করে থাকেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, যুগের চাহিদা পূরণে আমাদের প্রযুক্তির সাথেই এগিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্ম ডিজিটাল কনটেন্টের প্রতি আগ্রহী। লাইব্রেরির প্রতি যাতে তাদের আগ্রহ সৃষ্টি হয় এজন্য লাইব্রেরিকে অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার হচ্ছে জ্ঞানের বাতিঘর। এটিকে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের পদচারণায় সর্বদা প্রাণবন্ত রাখতে হবে। লাইব্রেরি পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় এলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা পাবেন। শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থী গ্রন্থাগারে যত বেশি সময় দেবেন তাঁরা লক্ষ্য অর্জনে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন।