ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ২৮ দিন পর আলোচিত গৃহবধূ গৃহবধূ রহিমা বেগমের (৫২) জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। শনিবার রাতে দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফুল হায়দারের নেতৃত্বে পুলিশ তাকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করে। লুৎফুল এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন।
রহিমা খাতুনের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের উপ কমিশনার উত্তর মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন।
পুলিশ বলেছেন, উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম নিজেই আত্মগোপন করেছিলেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। তাঁকে খুলনায় আনা হচ্ছে। তাঁকে বোয়ালিয়া এলাকা থেকে সাড়ে ১০টা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত পৌনে ১১ টায় তাকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।
রহিমা খাতুনের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের উপ কমিশনার উত্তর মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন।
আর এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই মাত্র একদিন আগে শুক্রবার ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় উদ্ধার হওয়া এক নারীর মৃতদেহের একটি পোশাক দেখে নিজের মা নিশ্চিত করা কন্যা মরিয়ম মান্নান ‘ইউটার্ণ’ নিয়েছেন। তিনি রাত ১১.৩৬ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে দুটি মিডিয়ার নাম উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমাকে জানালো আমার মা’কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুলনার পুলিশ সুপার কল দিয়ে জানালেন আমার ছোটবোনকে আমার মা’কে পাওয়া গিয়েছে। আমার থেকে খুশি এই মুহুর্তে কেউ নেই। আমি এই মুহুর্তে খুলনা যাচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে।’
গত ২৭ আগস্ট খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে গৃহবধূ রহিমা বেগম নিখোঁজ হন। পরদিন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী খাতুন বাদি হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই নারী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে পিবিআই।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি এই মাত্র’। এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর দেখা যায়, অনেকে শেয়ার করেছেন। এছাড়া স্ট্যাটাসের নিচে ৭৭৩টি কমেন্টস পড়েছে। এরপর তিনি আরেকটি স্ট্যাটাসে লেখেন ‘ আর কারো কাছে আমি যাবো নাহ! কেউকে আর বলবো নাহ আমার মা কোথায়! কেউকে বলবো নাহ আমার মাকে একটু খুঁজে দিবেন! কেউকে আর বিরক্ত করবো নাহ! আমি আমার মা’কে পেয়ে গেছি!’
তবে, শুক্রবার দুপুরে নিখোঁজ রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ‘লাশটি পচা গলা অবস্থায় পেয়েছেন তারা। আমি অফিসিয়াল প্রমানের জন্য অপেক্ষা করছি। আমার মায়ের কপাল, আমার মায়ের হাত, আমার মায়ের শরীর আমি আমি কিভাবে ভুল করি। ফুলপুর থানা, ময়মনসিংহ এবং চইও পিবিআই ময়মনসিংহ এবং জঅই ১৪ আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন এই বিষয়ে। অফিসিয়াল কাজ পরে আমি সবার সাথে কথা বলব প্লিজ।’
ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন শুক্রবার জানিয়েছিলেন, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নিখোঁজ রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ স্বজনরা ফুলপুর থানায় অবস্থান করে। এ সময় মরিয়ম মান্নান গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা এক নারীর গলিত মরদেহের চারটি পোশাকের মধ্যে একটি স্যালোয়ার তার নিখোঁজ মায়ের বলে মনে করছেন। তবে বাকি তিনটি পোশাক সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেননি। ফলে বলা যাবে না, ফুলপুর থানা এলাকায় উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ রহিমা বেগমের। উদ্ধার হওয়া লাশটি ডিএনএ টেস্ট করানো হবে। এর পরেই সনাক্ত করা যাবে লাশটি আসলে কার।
আজ রবিবার আদালতের আদেশের মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করার কথা ছিল।