UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইউপি চেয়ারম্যানের শিশুপুত্রকে হত্যার পর ঘাতকের স্বেচ্ছামৃত্যু

koushikkln
মে ১৮, ২০২২ ১১:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : ইউপি চেয়ারম্যানের শিশুপুত্রকে কুপিয়ে হত্যার ঘন্টা তিনেকের ব্যবধানে আত্মহত্যা করেছে ঘাতক। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বয়াতির ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার পর টিঅ্যান্ডটি টাওয়ারের ওপর থেকে লাফিয়ে অভিযুক্ত যুবক এ ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

এর আগে বুধবার (১৮ মে) বিকাল ৪টার দিকে সদরপুর উপজেলা সদরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে প্রবেশ করে তার শিশু সন্তানকে হত্যা করে অভিযুক্ত এরশাদ মোল্যা।

সদরপুর থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টার দিকে এরশাদ মোল্যা আটরশি টিঅ্যান্ডটি টাওয়ারের ওপর থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমি ঘটনাস্থলে আছি। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।’
চেয়ারম্যানের নিহত শিশু সন্তানের নাম আল রাফসান (১০)। রাফসান স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের দুই ছেলের মধ্যে ছোট রাফসান। সন্তানকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে কুপিয়ে আহত করা হয় ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান বেগম রতœাকেও (৩৫)। তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে সদরপুর থানায় রাখা হয়েছে।

সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওমর ফয়সাল বলেন, শিশু রাফসানকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মৃত্যু হয়। দিলজাহানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা ও ইউপি চেয়ারম্যানের স্বজনরা জানান, গত সোমবার ঢেউখালী ইউনিয়নের এরশাদ মোল্যার পারিবারিক দ্বন্দ্বের আপস মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি উপস্থিত ছিলেন। সালিশে এরশাদ মোল্যা স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে চান। কিন্তু স্ত্রীর পরিবারের লোকজনের আপত্তি থাকায় তাকে নিয়ে এরশাদ মোল্যার সংসার করতে হবে বলে সালিশে সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে এরশাদ মোল্যার দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে এরশাদ মোল্যা বুধবার বিকালে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে চেয়ারম্যানের শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ঘটনাস্থলেই চেয়ারম্যানের ছেলে রাফসান প্রাণ হারায়।

সদরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার সকালে ঢেউখালী ইউনিয়নের এরশাদ মোল্যার পারিবারিক দ্বন্দ্বের আপসে সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে এরশাদ মোল্যা স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে চান। কিন্তু স্ত্রীর পরিবারের লোকজন আপত্তি তোলে। পরে এরশাদ মোল্যাকে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। নয়তো স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে হলে কাবিন এবং ভরণপোষণের জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে বলা হয়। বুধবার এ বিষয়ে এরশাদ মোল্যার সিদ্ধান্ত জানানোর দিন ছিল। ওই সালিশে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতিও ছিলেন। কিন্তু আজই চেয়ারম্যানের শিশু পুত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং তার স্ত্রীকে গুরুতর আহত করা হলো।

এদিকে ঘটনার পরপরই এরশাদ মোল্যাকে খুঁজতে বের হয় লোকজন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এরশাদ মোল্যা আটরশি টিঅ্যান্ডটি টাওয়ারের ওপর থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানা যায়।

ভাঙ্গা থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, অভিযুক্ত এরশাদ মোল্যার ছোটভাই ইমরান হোসেন ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর এলাকায় স্থানীয়দের গণপিটুনির শিকার হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। সে পুলিশ হেফাজতে আছে।