ঊষার আলো রিপোর্ট : করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে বিশ্ব এখন আর্থিক মন্দার দ্বারপ্রান্তে। এই অবস্থায়ও দেশের অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চার করছে পোশাকশিল্প। এসব প্রতিকূলতার পরও ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতে সবার ওপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ইউরোপের পোশাক আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ছিল। এই সময়ে (জানুয়ারি-জুন) বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বাজারে পোশাক আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ (৪৪.৬০ শতাংশ) বেড়েছে। যেখানে তাদের বৈশ্বিক আমদানি বেড়েছে ২৫.০৩ শতাংশ। এর মাধ্যমে ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ১১.৩১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস চীন। আলোচ্য সময়ে চীন থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি ২১.৭৮ শতাংশ বেড়েছে। চীন থেকে এ সময়ে আমদানি হয় ১২.২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি পোশাকপণ্য।
অন্যদিকে তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৃতীয় বৃহত্তম পোশাকের উৎস। আলোচ্য সময়ে তুরস্ক থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি ২০.৩৮ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে তুরস্ক থেকে ১০.৮৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি পোশাক আমদানি করেছে ইইউ। এ সময়ে ইউরোপের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস যেমন কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে আমদানি যথাক্রমে ২৪.৯০ শতাংশ, ৪০.১৫ শতাংশ, ৩২.২৮ শতাংশ ও ২৮.৬৪ শতাংশ বেড়েছে।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আমাদের পোশাকশিল্পে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কারখানার মান উন্নয়ন হয়েছে, কর্মপরিবেশ উন্নত হয়েছে, শ্রমিকের মজুরি বাড়ানো হয়েছে—সব মিলে পোশাকশিল্প এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রিন কারখানা এখন বাংলাদেশে। শিল্পের এই আমূল পরিবর্তনের সূফল আমরা এখন পাচ্ছি। আমেরিকার এসব ক্রেতার এখন পছন্দের শীর্ষ জায়গা বাংলাদেশ। এ ছাড়া বিশ্বের সব দেশের ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে এখন বাংলাদেশের বাজার। ’
তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধির ফলে ইউরোপের খুচরা বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের বাকি সময়টিতে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে, তা ভাবনার বিষয়।
ঊষার আলো-এসএ