UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউসিবির সঙ্গে একীভূত হচ্ছে না ন্যাশনাল ব্যাংক

usharalodesk
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৭:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করা থেকে পিছু হটছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আপাতত বাধ্যতামূলকভাবে কোনো সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংককে একীভূত হতে বাধ্য করবে না। একই সঙ্গে এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে-সে বিষয়েও ব্যাংকগুলোর পর্ষদ যৌথভাবে সিদ্ধান্ত না নিলে তারা বাধ্য করবে না। তবে সরকারি ব্যাংকগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত সরকারই নেবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু করবে না। সূত্র জানায়, এবার বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অপর বেসরকারি ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় শনিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি খাতের বেসিক ব্যাংক সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার ব্যাপারে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। এদিকে সরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার বিষয়েও অপর সরকারি ব্যাংক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মীরা আন্দোলন করছেন। তবে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যাংকের পর্ষদ এখনো একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে ১৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাংবাদিকদের ডেকে জানিয়েছিল আপাতত পাঁচটি ব্যাংকের বাইরে কোনো ব্যাংক একীভূতকরণের আবেদন নেওয়া হবে না। ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে-এক্সিমের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। এ দুটি ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ইউসিবির সঙ্গে ন্যাশনাল একীভূত না হওয়ার বিষয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে এখন এ দুটি ব্যাংকও একীভূতকরণ হচ্ছে না। সিটির সঙ্গে বেসিকের একীভূত হওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে সরকারিভাবে আলোচনা চলছে।

যদিও এর আগে গভর্নর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, ৮ থেকে ১০টি ব্যাংক একীভূত করা হবে। একীভূতকরণ নিয়ে ব্যাংক খাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে আমানত তুলে নিচ্ছেন। এতে ব্যাংকে আমানত কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুর্বল ব্যাংকগুলোর আমানত বেশি তুলে নেওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সামল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপাতত নতুন করে বাধ্যতামূলকভাবে আর কোনো ব্যাংককে অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণ করবে না। সূত্র জানায়, আগে থেকে কোনো আলোচনা না করে হঠাৎ ৯ এপ্রিল ইউসিবির সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত হওয়ার কথা বলা হয়। এতে আমানতকারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে শুরু করেন। এর বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মীরাও আন্দোলন শুরু করেন। ফলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ওই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়নি। ফলে আপাতত ন্যাশনাল ব্যাংক ইউসিবির সঙ্গে একীভূত হচ্ছে না।

পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ব্যাংকটিকে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আবার জোরালো পদক্ষেপ নেবে। এর মধ্যে ঋণ আদায় জোরদার করবে। বিশেষ করে শীর্ষ খেলাপিদের থেকে আদায়ে ঋণ আদায়ে জোর দেওয়া হবে। এজন্য কর্মকর্তাদের বিভিন্ন স্তরে ঋণ আদায়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতের জন্য দ্রুত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা (পিসিএ) নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আলোকে একটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ, মূলধন পরিস্থিতি, ব্যবস্থাপনা ও তারল্য পরিস্থিতি এই ৪টি সূচকের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিধিনিষেধের চূড়ান্ত পর্যায়ে দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত না হলে মার্চ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এক করার কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এরপর ৪ এপ্রিল ব্যাংক কিভাবে একীভূতকরণ করা হবে সে বিষয়ে নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালা অনুসরণ না করে কয়েকটি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এভাবে চাপিয়ে দেওয়া নিয়ে ব্যাংক খাতে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

ঊষার আলো-এসএ