বিশেষ প্রতিনিধি : নতুন কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তার সৃষ্টির লক্ষে কক্সবাজারে দিনব্যাপী চাকরি এবং হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় উদ্যোক্তারা নিজেদের তৈরী পোশাক, বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প প্রদর্শন করেন। ‘কমিউনিটি কোহেশন ইন কক্সবাজার’ প্রকল্পের আওতায় জেলার উখিয়া ও টেকনাফে ২২টি ট্রেডের আওতায় ১২০ জন বেকার তরুণ-তরুণী মেলায় অংশ নেন।
সোমবার (২৮ মার্চ) নগরীর কলাতলীর একটি অভিজাত হোটেলের হল রুমে ইউএনডিপির সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ এ মেলার আয়োজন করে।
উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী শাহারিয়া পারভীন লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ইউএনডিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার মাসুদ করিম। বক্তব্য দেন ইউএনডিপির স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট, থুই নু মং মারমা, হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, ইউমেন চেম্বার অব কমার্স এর সহ-সভাপতি মনোয়ারা পারভীন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন স্পেশালিস্ট এস এস বখত হিন্দোল, ইউএনডিপির আবুল ফারাহ মো. সালেহ, আব্দুল জলিল শেখ, উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী সঞ্জয় আচার্য্য, প্রজেক্ট ম্যানেজার কাজী মো. সোহরাব, এমএলডিই এম এম হাসিবুর রহমান ও মো. আবু জাফর বিশ্বাস।
উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী শাহারিয়া পারভীন আয়োজন প্রসঙ্গে বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেন। এতে স্থানীয় মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এবং অর্থনৈতিকভাবে সামলম্বী করতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উখিয়ার রাজাপালং ও পালংখালী এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা এবং বাহারছড়া ইউনিয়নে বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২ হাজার ১০০ জন বেকার তরুণ ও তরুণীকে ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাক্টশন, হাউসকিপিং অ্যান্ড লন্ড্রি, কোমর তাঁত, হস্তশিল্প (বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য), ইলেট্রিক্যাল হাউস ওয়ারিং, বিষমুক্ত শুঁটকি মাছ উৎপাদনসহ ২২টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২০২০ সালে ৪০০ জন, ২০২১ সালে ১ হাজার ৬০০ এবং ২০২২ সালে ১০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০২ জন নারী এবং ৭৯৮ জন পুরুষ, আদিবাসী কমিউনিটি থেকে ২৭৪ জন ও ৭জন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, মূলত কর্মসংস্থানে আগ্রহীদের সাথে কর্মসংস্থান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ সৃষ্টির লক্ষে মেলাটির আয়োজন করা হয়েছে। আমরা এ থেকে ভাল সাড়া পেয়েছি। দক্ষ ও যোগ্যতা সম্পন্ন বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের নতুন আশা পাবেন। যা স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মেলায় অংশ নেওয়া হোটেল মালিক, বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাও দক্ষ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেছেন, দক্ষ জনগোষ্ঠী কক্সবাজার অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।