ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা-যশোর মহাসড়কের দৌলতপুরস্থ উত্তরা ব্যাংক চত্ত্বর ঘেঁষে গড়ে ওঠা ফুলের দোকানগুলোতে থরে-থরে ফুলের শোভায় মুখরিত। লাল গোলাপ, জুঁই, চামেলী, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গ্যালাডিয়াস, ইয়োলোস্ট্রা, মল্লিকা, গাঁদাসহ নানা রঙ বেরংঙের বির্ণীল ফুল। সামাজিক, রাজনৈতিক, ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুলোতে অতিথি বরণসহ সৌন্দর্যবন্ধনে ফুলের যেন বিকল্প কিছুই নেই। উৎসবের রঙে রাঙিয়ে দিতে ফুল যেন অবিচ্ছদ্য অংশ। সামাজিক অনুষ্ঠানাদীর মধ্যে বিয়ে, সুন্নতে খাতনা, জন্মদিন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানাদীর মধ্যে মিটিং মিছিল, জনসমাবেশ, সভা- সেমিনার, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতের নানা দিবসসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের আচার অনুষ্ঠানে ফুল শোভাবদ্ধন ছাড়া অপূর্ণ।
তবে সম্প্রতি সময়ে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার দরুন সকল প্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক সভা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী বাতিল করার নির্দেশনা আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া প্রায় দেড় বছরের অধিক সময়ে করোনার আবির্ভাব আর দীর্ঘ লকডাউন, আর ধারাবাহিক আর কঠোর বিধিনিষেধসহ কারণে দৌলতপুর ফুল ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। করোনা নামক প্রাণঘাতি ব্যাধির প্রভাবে নগরীর দৌলতপুরের ফুল ব্যবসায়ীরা সর্বশান্ত আর হাত গুটিয়ে নামে মাত্র দোকান খুলে অলস সময় পার করছে। যেহেতু সরকারী নির্দেশনা কোন অবস্থাতেই জনসমাগম করা যাবে না, আর সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলার নির্দেশনার কারণে সমাজের সচেতন মহলও এই করোনা সংকটকালীন মুহুর্তে কোন প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। যে কারণে সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক কোন প্রকার অনুষ্ঠানের কাংক্ষিত সাড়া না মেলায় ফুল ব্যবসাকে ঘিরে ঘোর হতাশা নেমে এসেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
সরেজমিনে, করোনার প্রার্দুভাবে দৌলতপুরের মীম গার্ডেন, পলক পুষ্পমালয়, মাধুরী পুষ্প, জুই গার্ডেনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা নামে মাত্র দোকান খুলেছে। তবে চেয়ার পেতে বসা মাত্র। দোকান ফুলে-ফুলে সাজানো থাকলেও কর্মচারীর বেতন আর ঘর ভাড়া গুনতে হচ্ছে বসে বসে। নেই কাংক্ষিত কেনাবেচা আর ক্রেতা।
করোনার আগে প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের যশোর ঝিকরগাছা গদখালী হতে ফুল আমদানি করা লাগতো। আর এখন সপ্তাহে দু’হতে তিনদিন আমদানি করা লাগে। তবু ফুল থেকে যায় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দৌলতপুরের মীম গার্ডেনের ফুল বিক্রেতা সুমন জানান, করোনা কারণে দোকানে কেনা বেচানাই। যে করোনার আগে প্রতিদিন ২ হাজার হতে পঁচিশশো টাকা কেনাবেচা করতাম। বর্তমানে ৪/৫ শ’ টাকার মতো কেনাবেচা হয়। কখনো আরো কম। করোনা আগে সকাল ৮টার মধ্যে দোকান খুলতে হতো আর বর্তমানে খোলা হয়ে ১০টার পর। সারাদিন বসে থেকে থেকে খুব কমই ক্রেতার দেখা মেলে। সবমিলিয়ে ভালো নেই দৌলতপুরের ফুল ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা। তাদের চোখে মুখে একটাই কথা সুস্থ এ পৃথিবী আগের মতোই সুস্থ হয়ে উঠুক। আর পৃথিবী হতে চিরতরে বিদায় হোক করোনা মহামারী। জীবন আর জীবিকার প্রয়োজনে সকলেই ছুটে চলুক স্বাভাবিক গতিতে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)