আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চরম বিপর্যায়ে পড়েছে বাগেরহাটের পোল্ট্রি খামারীরা। উৎপাদিত মুরগী বাজারজাত করতে পারছেন। কিন্তু খামারে থাকা মুরগির খাবার যোগান দিতে ও পরিচর্যা করতে হিমসিম খাচ্ছে। জেলার চিতলমারি উপজেলার পোল্ট্রি খামারি টিপুকে এখন লাভের বদলে গুনতে হচ্ছে লোকসান। মাত্র কয়েকদিন আগেও তার খামারে ছিল পাইকারদের আনাগোনা। কিন্ত্র এখন সেখানে কেহই আসছে না। শুধু নীরবতা। কারন বাইরে চলছে কঠোর লকডাউন। এ অবস্থায় খরিদদারের অভাবে মুরগি ও ডিম নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে সে আশায় বসে আছেন খামারি টিপু। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরশৈলদাহ গ্রামের পোল্ট্রি খামারী নাজমুল হক টিপু শনিবার সকালে এ কথাগুলি বললেন এ প্রতিবেদক কে। ওই সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, নাজমুল হক টিপু প্রায় ১০ বিঘা জায়গার উপর পোল্ট্রি খামারসহ মাছের চাষ ও বিভিন্ন ফলের বাগান করেছেন। তার খামারে প্রায় ৫ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। এতে কয়েক হাজার ডিম দেয় প্রতিদিন। এসব ডিম স্থানীয় পাইকাররা খামারী থেকে কিনে নেন। কিন্তু চলমান লকডাউনে কোন পাইকার আসছে না খামারে। পাশাপাশি বাজারে ডিমের মন্দা দেখা দেওয়ায় এখন সঠিক দাম পাচ্ছেন না। বর্তমান ডিম বিক্রি করে লাভ দূরে থাক লোকসান গুনতে হচ্ছে তাকে। তিনি ১০ বছর আগে এ খামারটি গড়ে তোলেন। একজন স্বাবলম্বী উদ্যক্তা হিসাবে অল্প দিনে তিনি খামার পরিচালনা করে লাভের মুখ দেখলেও এখন লক ডাউনের কারণে হতাশায় ভুগছেন। খামারে কর্মরত শ্রমিক চিন্ময় জানান, এখানে কাজ করে ১০-১৫ জন শ্রমিকের সংসার চলে কিন্তু করোনার পর থেকে এখন তাদের তেমন কোন কাজ নেই। এতে আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন তারা। শৈলদাহ গ্রামের বাসিন্দা আবুসাঈদ জানান, নাজমুল হক টিপু একজন পরিশ্রমী মানুষ। তিনি বেশ সুন্দর একটি ফলের বাগান, পোল্টিফার্ম ও মাছের খামার করেছেন। এখানকার লেয়ার মুরগীর ডিম ও মাংসের এলাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে। নাজমুল হক টিপুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বেকারত্ব দূর করার জন্য খামারটি করেছেন তিনি। অল্পদিনে খামার থেকে বেশ সফলতা পেয়েছেন কিন্তু চলমান লকডাউনের কারণে সব উন্নয়ন থমকে গেছে। গত বছর লকডাউনে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুধু আমার নয় উপজেলার প্রতিটা পোল্ট্রি খামারির একই অবস্থা। এ লোকসান কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন তা-নিয়ে চিন্তিত সকল খামারিরা।
(ঊষার আলো-আরএম)