পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লতাচাপলী ইউনিয়নে “মুসুল্লীয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে” নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং কাজের অনিয়মের অভিযোগ এনে ওয়াশ ব্লক নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে এ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ রাতের অন্ধকারে ছাদের ঢালাই, পরিমাণের কম সিমেন্ট ব্যবহার, উন্নতমানের খোয়ার পরিবর্তে রাবিশ, মাটি-বালির উপরে বেইজ ঢালাই, বেশ কিছু স্থানে পরিমাণের চেয়ে কম রড ব্যবহার করছে নির্মাণাধীন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা মটরস। এসব নানান অভিযোগ এনে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে কাজ বন্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল। তিনিও স্বীকার করে বলেন, কাজের অনিয়ম হয়েছে।
কলাপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের দেয়া তথ্যমতে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থায়নে এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। স্যানিটেশনের জন্য নির্মিত দুইতলা ব্লকে খাবার পানি, একপাশে হাত মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা, অন্য পাশে শিক্ষার্থীদের অজুখানা, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করে তৈরি করা হচ্ছে এ ওয়াশব্লকগুলো।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মো. হযরত আলী বলেন, এই ওয়াশব্লক নির্মাণ কাজের শুরু থেকে তারা অনিয়ম করে আসছে। আমরা যখন আসি তখন ভালো করে কাজ করে, আবার চলে যাওয়ার সাথে সাথে তারা অনিয়মের আশ্রয় নেয়। প্রথমে মাটির উপরে বেইজ ঢালাই দিয়েছে, ভবনের ছাদে রড বাঁধার কথা ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি পরপর কিন্তু তারা রড বেধেছে ২০ থেকে ২৭ ইঞ্চি পরপর। ঢালাই দিচ্ছে রাবিশ খোয়া দিয়ে, নিয়ম অনুযায়ী স্কুল খোলাকালীন সময়ে ঢালাই দিবে কিন্তু তারা প্রথম থেকে ঢালাই দিয়ে আসছে রাতে। তাই আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
মুসুল্লীয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুস হাসান জানান, সিডিউল অনুযায়ি কাজটি করার কথা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি সেভাবে করছে না। বিদ্যালয় কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার স্থান এখানে যেকোন দুর্ঘটনা ঘটলে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবো আমরা।
নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল ঘটনাস্থলে এসে জানায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ করেছে তার সত্যতা পাওয়া গেছে, আমি আমার উর্ধ্বতনদের সাথে কথা বলেছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা মটরসের দায়িত্বে থাকা মো. আজিজ জানান, আমার অনেকগুলো কাজ চলে এই এলাকায় তাই আমার বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। রড কম দেওয়া কিংবা কাজের যে অনিয়মের অভিযোগ এগুলো আমার অজান্তে হয়েছে। আমরা এটা সংশোধন করে নেবো।