ঊষার আলো রিপোর্ট: বর্তমান বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এর কারণে মানব সভ্যতা যে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে না, তা নিয়ে কোনো বিজ্ঞানীই সুনিশ্চিত আশ্বাস দিতে পারছেন না। তেমনই, আর এক বৈপ্লবিক আবিষ্কার নাড়া দিয়েছে বিশ্বকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ উদ্ভাবন গর্ভপাতের কারণ ও মানব বিকাশের বিভিন্ন বিষয়াদি নতুন করে বুঝতে সহায়তা করবে। তবে, আইনি ও নীতিগত বিভিন্ন প্রশ্নও জন্ম নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন শহরে অলাভজনক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর স্টেম সেল রিসার্চ’ আয়োজিত বার্ষিক সভায় এ কৃত্রিম ভ্রূণকে ১৪ দিন পর্যন্ত বিকশিত প্রাকৃতিক ভ্রূণের পর্যায়ে নেওয়ার বর্ণনা দেন ‘কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জারনিকা-গোয়েটজ।
জানা গেছে, এ কাঠামোর জন্য ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর প্রয়োজন পড়ে না। আর এতে স্পন্দনশীল হৃৎপিণ্ড বা মস্তিষ্ক গঠনে ব্যবহৃত কোষ না থাকলেও প্ল্যাসেন্টাসহ অন্যান্য অঙ্গ ও ভ্রূণের নিজের গঠন তৈরিতে ব্যবহৃত কোষ আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে বড় যে আশঙ্কার জায়গা হলো, ‘ডিজাইনার বেবি’ উৎপাদনের। যাদের ক্ষমতা আছে, তারা অর্থ ব্যয় করে ‘সর্বগুণযুক্ত, নীরোগ, শক্তিশালী’ সন্তানের বাবা-মা হবে। সেসব সন্তানই কি ভবিষ্যৎ বিশ্বে চালকের আসনে বসবে? তাদের কাছে ক্রমাগত পর্যুদস্ত হতে থাকবে স্বাভাবিক প্রজননে জন্ম নেওয়া শিশু এবং পরবর্তীকালের নাগরিক?
যদিও এটিকে মানব ভ্রূণ বলতে নারাজ ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী গবেষণা পরিচালক জেমস ব্রিসকো। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, মানব ভ্রূণের স্টেম সেল থেকে প্রাপ্ত মডেল তৈরির জন্য প্রবিধানের জরুরি প্রয়োজন রয়েছে। ভ্রূণ-সদৃশ কাঠামো তার ল্যাব ইতোমধ্যেই তৈরি করেছে। জেরনিকা-গোয়েটজ বলেন, ‘আমি শুধু জোর দিয়ে বলতে চাই যে তারা মানব ভ্রূণ নয়, সিন্থেটিক ভ্রূণ।
এগুলো ভ্রূণের মডেল, কিন্তু তারা খুব সুন্দর দেখতে একেবারে মানব ভ্রূণের মতো। পরে আবিষ্কারের জন্য তারা গুরুত্বপূর্ণ পথ দেখাবে’। গবেষকরা আশা করছেন, এ মডেল ভ্রূণগুলো মানব বিকাশের ‘ব্ল্যাক বক্সে’ আলোকপাত করবে।
ঊষার আলো-এসএ