১০ হাজার টাকায় ফেরৎ পেল ৫৫ হাজার টাকা
ঊষার আলো প্রতিবেদক: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ইজিবাইক লাইসেন্স নিয়ে তেলেসমাতি খবরের শেষ নেই। একটি ইজিবাইকের লাইসেন্সের বিপরিতে দশ হাজার টাকা গ্রহণ করে গ্যারাকলে আটকে ফেরৎ দিতে হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কেসিসির প্রশাসনিক শাখায়। প্রশাসনিক শাখার নি¤œমান সহকারি মোঃ নাঈমুজ্জামান ইজিবাইকের লাইসেন্স দেয়ার কথা বলে খালিদ সাইফুল্লাহ নামের বেসরকারি চাকুরিজীবীর কাছ থেকে দশ হাজার টাকা গ্রহণ করে। পরে তিনি লাইসেন্স না দিয়ে পুরো টাকাই আতœসাৎ করেন। এমন কি লাইসেন্স দেয়ার তথা বলে নাঈম ওই খালিদের সাথে কয়েক মাস নানা টালবাহানা করতে থাকেন। অবশেষে খালিদ বিষয়টি নগরীর প্রভাবশালীদের দ্বারস্থ হলে তাদের সাথে বৈঠক করে লাইসেন্স দিতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে নাইম জরিমানা বাবদ ৫৫ হাজার টাকা দেন। গত মাসের প্রথম দিকে এ জরিমানার টাকা দেন। ওই অভিযোগকারী খুলনাস্থ বাংলাদেশ আই হাসপাতালের কর্মচারি। তিনি ২৫নং ওয়ার্ডের বাবুল শেখের ছেলে।
তিনি আরো বলেন, এই ন্ঈাম তার সাথে চরম প্রতারণা করেছেন। অনেক চাপাচাপির পর তিনি তাকে ৬২৫৩ নাম্বারের একটি ইজিবাইক লাইসেন্স দেন। যা জাল বলে প্রমাণিত হয়। কারণ ওই লাইসেন্সসহ পুলিশ আটক করলেও লাইসেন্স দেখালেও পুলিশ ছাড়েনি। পরে নাঈম তদ্বির করে ওই ইজিবাইক পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনে। নাঈমের নিকটজনের মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই ইজিবাইকের লাইসেন্স ক্রয় করার জন্য নাঈমের শরনাপন্ন হন তিনি। দিনের পর দিন ঘুরেছি। কিন্তু ইজিবাইকের লাইসেন্স দেয়নি। পরে নগরভবনে গিয়ে উঠলে নাঈম বাধ্য হয়ে জরিমানা বাবদ আসলসহ ৫৫ হাজার টাকা ফেরৎ দেয়। এই নাঈম কেসিসির ইজিবাইক জালিয়াতি চক্রের সাথে জড়িত বলে সূত্রটি জানায়। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এতো একজন ধরা পড়ে তা মাশুল গুনলো। নগরভবনে রয়েছে আরো দুর্নীতিবাজচক্র। যারা ইজিবাইক নিয়ে নানাভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। এ চক্র ধরতে কেসিসির মেয়র তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
এ ব্যাপারে নাঈমের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার অফিসে যাওয়া হলেও ব্যস্ততার অজুহাতে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে কেসিসির ইজিবাইক দুর্নীতি নিয়ে গঠিত তদন্ত টিম মাঝ পথে এসে থেকে গেছে। ওই তদন্ত রিপোর্ট আদৌ আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে তদন্ত টিমের সদস্যরা। কারণ তদন্ত টিমের প্রধান কেসিসির ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে বদলী হয়ে গেছেন্। বিষয়টি তদন্তের জন্য নতুন করে আর কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট বদলী হওয়ার পর থেকে তদন্ত থেমে আছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
কেসিসির সচিব মোঃ আজমুল হক বলেন, ইজিবাইকের দুর্নীতি নিয়ে গঠিত তদন্ত রিপোর্ট কি হয়েছে তা বলতে পারছেন না। তবে টিম প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট বদলীজনিত কারণে তদন্ত কি হাল হয়েছে তা তিনি খুলনায় আসার পর বলতে পারবেন বলে জানান।