UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুলনায় জাপার প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় নামছে না

ঊষার আলো রিপোর্ট
ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩ ৯:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

               আজ জরুরী সভা, মধুকে জোটের প্রার্থী করার দাবি

খুলনা ৬টি আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রতীক পেলেও নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি। খুলনা ৬নং আসনে (কয়রা-পাইকগাছা) জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুকে জোটের প্রার্থী না করায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আজ বুধবার সকালে ডাকবাংলাস্থ পার্টি কার্যালয়ে জেলা ও মহানগর জাপা এক জরুরী সভা আহবান করেছে। ওই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ননী গোপাল মন্ডল দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ ‘লাঙ্গল’ প্রতীক পেয়েছেন।

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম ‘’লাঙ্গল’’প্রতীক পেয়েছেন। খুলনা-৩নং (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন ‘লাঙ্গল’, প্রতীক পেয়েছেন ।

খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদী ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির ফরহাদ আহমেদ ‘লাঙ্গল’, প্রতীক পেয়েছেন। খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ‘নৌকা’, জাতীয় পাটির মো. শাহীদ আলম ‘লাঙল’ প্রতীক পেয়েছেন।

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু ‘লাঙ্গল’, প্রতীক পেয়েছেন। খুলনা ৬টি আসনেই জাপার প্রার্থী রয়েছে। খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম বলেন, খুলনা একটি বিভাগীয় শহর।

এখান থেকে একজনকে জোটের প্রার্থী করার ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে জোর দাবি ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। দীর্ঘ ১৫/২০ বছর ধরে খুলনার জাপাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা কেউই প্রচারণায় নামেননি।

এ ব্যাপারে কি করনীয় তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ বুধবার বেলা ১১টায় খুলনা জেলা ও মহানগর জাপা ডাকবাংলাস্থ দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক ডেকেছে। বেঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। খুলনা জাপা নির্বাচনে যাবে কি না। খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও জেলা জাপার সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম মধু খুলনায় জাপার অভিভাবক হিসেবে পরিচিত।

তিনি বলেন, আ’লীগ সারা দেশে জাপাকে ২৬টি আসন ছাড় দিয়েছে। কিন্তু বিভাগীয় শহর খুলনাকে এ হিসেবে বঞ্চিত করেছে। দলের জোরালো দাবি ছিল, খুলনা জেলার একটি আসন জোটের পক্ষে জাপাকে ছাড় দেয়া হোক। কিন্তু তা দেয়া হয়নি। দীর্ঘ ৩টি সংসদীয় নির্বাচন খুলনা ৬নং আসন থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছেন তিনি।

এবার বড় আশা ছিল জোটের প্রার্থী হিসেবে দল খুলনা ৬নং আসনে জাপাকে ছাড় দিবে। কিন্তু তা না দেয়ার জন্য খুলনার নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ হয়েছে। সেই জায়গা থেকে তারা এখনও প্রচার-প্রচারণায় নামেননি। আজ সভা ডাকা হয়েছে। ওই সভায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সিদ্ধান্তের আলোকে নির্বাচন করবো কি না তা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর যদি জোটগতভাবে খুলনা ৬নং আসন ছেড়ে দেয় তাহলে খুলনার জাপা নির্বাচনে আসবে বলে তিনি জানান।

খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফরহাদ আহমেদ বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোন কিছু করা ঠিক হবে না। দল সাময়ীকভাবে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই তিনি প্রচার-প্রচারণা করছেন না। তবে পোস্টার-লিফলেট সবাই ছাপিয়েছেন তিনি বলে জানান।

জাপার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মধু আরো বলেন, খুলনা ৬নং আসনে তিনি ৯ম, ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। সব সময় তিনি জাপার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার সুযোগ পেয়েছেন। নানা কারণে তিনি নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও তিনি কখনই ওই এলাকার মানুষকে ছেড়ে আসেননি।

ঘুর্ণি ঝড় আইলায়, আম্পানসহ বিভিন্ন দুর্যোগে তিনি কয়রা-পাইকগাছাবাসীর পাশে ছিলেন। এছাড়া করোনাকালিন সময়ও তিনি ওই অঞ্চলের ঘর বন্দি মানুষের সহায়তা করেছেন। চতুর্থবারের মত তিনি এবার এ আসন থেকে জোটের প্রার্থী হবেন-এমনই প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। কিন্তু তা হলো না।

এছাড়া তিনি ২০১৩ সালে ও ২০২৩ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছেন। দেশের নানা প্রেক্ষাপটে তিনি এসব নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তার ঝুড়িতে রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান তিনি এবার। খুলনা ৬নং আসনে জাপার রিজার্ভ ভোট আছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার। নির্বাচনে সঠিকভাবে তিনি কাজ করতে পারলে বিজয় তার জন্য কঠিন কিছু নয় বলে এই ত্যাগী নেতা মনে করেন।

জাপার প্রবীন নেতা শাহ লায়েক উল্লাহ বলেন, জেলা জাপার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু একজন ত্যাগী নেতা। তিনি দীর্ঘ দিন খুলনায় জাপাকে উজ্জীবিত করে রেখেছেন। তার ৬নং আসনটি জোটগতভাবে হবে-এমনটাই আশা ছিল সকলের। কিন্তু তা না হওয়ায় তিনি হতাশ।