UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অব্যাহত বেড়িবাঁধ ভাঙন, মানচিত্র থেকে হারাবে কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি

pial
আগস্ট ১৭, ২০২২ ৪:৩৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : অব্যাহত বেড়িবাঁধ ভাঙনে খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবনঘেঁষা দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলেছেন, আড়পাঙ্গাশিয়া, শাকবাড়িয়া ও কপোতাক্ষ নদে বেষ্ঠিত প্রায় বদ্বীপ ভূ-খন্ড দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নটি। পাকা রাস্তাবিহীন (সমগ্র এলাকায় একটি পিচের রাস্তা নেই) অবহেলিত এ ভূ-খন্ডে বসবাসরত প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ নোনাপানিতে নিমজ্জিত। সর্বশেষ গত ১৪ আগস্ট চরামুখায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তৃণ এলাকা তলিয়ে গেছে।

|| সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা দাবি ||

বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নদীশাসন ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনীর তত্তাবধায়নে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ৭ দফা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

দাবির মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা, ক্ষতিগ্রস্তদের জলবায়ু ও পুনর্বাসন তহবিলে সরকারি বিশেষ বরাদ্দে গৃহনির্মাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, ১৩, ১৪/১ ও ১৪/২নং পোল্ডার খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করা, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও পাকাকরণ, স্কুল-মাদ্রাসা ও ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় উপাসনালয় মেরামত করা, প্রতিটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং প্রকল্পের সার্বিক বিবরণী বাধ্যতামূলক টাঙানো এবং বাঁধ নির্মাণ-সংস্কার কাজে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোলখালী গ্রামের টিএম আমিরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম নূর। উপস্থিত ছিলেন মামুনুর রশীদ সোহেল, মো. কবিরুল ইসলাম, মোঃ আসমাউল হোসাইন সোহাগ, মোঃ জামাল হোসেন, মোঃ মাকসুদ আলম, মো. ইমরান খান, মোঃ আমীর হামজা, আলমগীর হোসেন মুন্না, আসাদুল ইসলাম ও সোহেল হোসেন প্রমুখ|

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ১৪ আগস্ট সকালে চরামুখা খালেরগোড়া নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়; ১৫, ১৬ ও ১৭ আগস্ট ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক অনাহারী মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে প্রাণপন চেষ্টা করেও জনপদে নোনা পানির জোয়ার-ভাটা চলে। বুধবার স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটা আটকানো সম্ভব হয়েছে। এতে পাঁচটি গ্রামের অন্তত বিশ সহ¯্রাধিক মানুষ, ভেঙে গেছে বহু মানুষের বসতঘর, ভেসে গেছে মৎস্যঘের-মাছের পুকুর, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমগ্র ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট। দক্ষিণ বেদকাশির ৫ হাজার ৯৭১ একর আয়তনের প্রতি ইঞ্চিতে এখন নোনাপানিতে বিষাক্ত হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় গৃহপালিত পশু-পাখির মরদেহ ও মাছ পঁচা দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস ভারিয়ে হয়ে আসছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নটি। প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই হারাবে।