UsharAlo logo
সোমবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকার দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে : বিএনপি

pial
নভেম্বর ২০, ২০২২ ৪:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : সরকার দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে। জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করে বিএনপি এই ভঙ্গুর রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে মেরামত করবে। চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নেয়া সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। যার নেতৃত্ব দেবেন দেশনায়ক তারেক রহমান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন। রবিবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ উদ্যোগে ‘তারেক রহমান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমানকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম নেতা উল্লেখ করে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, তার নির্দেশে দেশের বিভাগীয় সদর গুলোতে লাখ লাখ মানুষ গণসমাবেশ সফল করতে রাস্তায় নেমে আসছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধে বিভাগীয় সদরগুলোতে বিএনপি জয়লাভ করেছে। এরপরও যদি সরকারের ঘুম না ভাঙ্গে তবে ১০ ডিসেম্বরের পরে আন্দোলন দ্বিতীয় পর্বে উন্নীত হবে। সরকারকে বিদায় করার পর ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনরত সব পক্ষকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে বিএনপি।

জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, সরকারের প্রতিহিংসায় তারেক রহমান দেশের বাইরে অবস্থান করলেও দেশের মানুষ আজ তার নির্দেশে শত মাইল পথ পাড়ি দিচ্ছে। এই সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বকে ভয় পায়। আর তাই তারা বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করছে। সিলেটের সমাবেশকে বাঁধাগ্রস্থ করতে বাঞ্ছারামপুরে ছাত্রদল নেতা নয়নকে হত্যা করেছে। এরআগে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৮ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। সরকার বিএনপির আন্দোলনকে রক্তাক্ত করতে চায়। ভয় ভীতি দেখাতে চায়। বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে সহিংস করে তুলতে চায়। সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত মোকাবেলা করেই বিএনপি এই যুদ্ধে জয়ী হবে।
সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন অভিযোগ করেন, সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে। দুদককে সরকারের অন্যায় কাজের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য দুদককে ব্যবহার করা হচ্ছে। পার্লামেন্টে যা খুশি তাই করা হচ্ছে। যাকে তাকে পার্লামেন্টে ঢোকানো হচ্ছে। জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে আদালত ও দুদকের অসুস্থতা চিরতরে শেষ করা হবে। দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন করে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করা হবে।

বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের সংকট নিয়ে কথা বললেই সরকার অস্থির ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। মন্ত্রীরা আবোল তাবোল বকতে থাকে। স্বপন বলেন, ব্যাংকে যাদের আমানত আছে তারা টাকা ফেরৎ পাওয়া নিয়ে হতাশায়। শেয়ার বাজারের বিনোয়াগকারীরা হতাশায়। প্রতি বছর এক লক্ষ কোটি টাকা এ দেশ থেকে পাচার হয়ে সুইস ব্যাংকে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ এক লক্ষ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটকে জায়েজ করতে সংসদে ইনডেমনিটি পাশ হয়েছে। এ দেশের টাকা পাচার করে ফারুক খানের কোম্পানি সিঙ্গাপুরে শীর্ষ ধনীর তালিকায়।
তারেক রহমানের আগামী জন্মবার্ষিকী বাংলাদেশে পালিত হবে আশা করে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, তার আগে ফ্যাসিবাদী শাসকের পতন হবে, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগন ভোটাধিকার ফিরে পাবে এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব পক্ষকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।

বক্তব্যের শুরুতে আধা মিনিটব্যাপী করতালির মাধ্যমে তারেক রহমানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান জহির উদ্দিন স্বপন। এ সময় মিলনায়তন ও বাইরে অবস্থানরত হাজার হাজার নেতাকর্মী সম্মিলিতভাবে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠেন।

খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
আলোচনায় অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট স ম বাবর আলী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুল বারী, নগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলম, বিএফইউজের সহ সভাপতি মোঃ রাশিদুল ইসলাম, মুসলিম লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, এনটিভি’র খুলনা ব্যুারো প্রধান আবু তৈয়ব মুন্সি, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।

সভা সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং পরে দোয়া মোনাজাত করেন ওলামা দল নেতা ম্ওালানা ফারুক হোসাইন।
বিশেষ অতিথি আজিজুল বারী হেলাল বলেন, তারেক রহমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতিতে বিশ^াসী ছিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয় রাজনীতিতে আসলে তিনি চিঠি পাঠিয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। ঈদে ও বিশেষ দিবসে তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শুভেচ্ছা উপহার পাঠাতেন। তিনি টিএসসিতে বাংলাদেশ উৎসব নামে দেশ ব্যান্ড শিল্পীদের কনসার্ট করেছিলেন। ঢাকা ও আশেপাশে ৬ লক্ষ নিমের চারা লাগিয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত ও আহতদের পাশে দাঁড়ায় বিএনপি। প্রাকৃতিক দূর্যোগে আক্রান্ত মানুষকে তার নির্দেশে সহায়তা পৌঁছে দেন দলের কর্মীরা। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দুঃস্থ অসহায় মানুষকে সহায়তা করা হয়।

হেলাল বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের হৃদয়। তাকে নির্বাসনে রেখে বাংলাদেশ ভালো থাকতে পারেনা। তিনি বলেন, নেতা তিনি, যিনি জনগনকে উজ্জীবিত করতে পারেন। তারেক রহমানের ডাকে দেশের মানুষ মুক্তির জন্য পাগল হয়ে উঠেছে। মাফিয়া সরকারের পতন ঘটিয়ে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে, অবাধ নির্বাচনে জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে, সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার এবং দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন কারই এখন আমদের লক্ষ্য।

এর আগে মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে একের পর এক মিছিল আসতে থাকে। প্রেসক্লাব মিলনায়তনের নির্ধারিত আসন পূর্ণ হয়ে লোকসমাগম ছড়িয়ে যায় আশেপাশের সড়কে। এ সময় ওই পথে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

(ঊষার আলো-এফএসপি)