ঊষার আলো ডেস্ক : খুলনা মহানগরীর ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা চলাকালে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ক্যাডারদের সশস্ত্র হামলার ঘটনায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা দাবি করেছে। তারা বলেছেন, এ সময় ৩০/৩৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। শতাধিক চেয়ার ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়। এ সময় সাধারণ ব্যবসায়ীদের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।
বুধবার (১৭ আগষ্ট) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে নগরীর নিউ মার্কেট সংলগ্ন বায়তুন নূর মসজিদের পাশে অশোকের গ্যারেজে পূর্ব নির্ধারিত ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সভা শুরু হয়। সাড়ে ৭টার দিকে মহানগর যুবলীগের এক শীর্ষ নেতার নেতৃত্বে কয়েক শত যুবলীগ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ কর্মী মিছিল শ্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। যাদের অধিকাংশই ছিল হেলমেট পরিহিত। হাতে লোহার রড, লাঠি, বাঁশ নিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে তারা কর্মী সভায় উপস্থিত বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলে পড়ে। তাদের বেধড়ক লাঠিচার্জ, লোহার রডের আঘাতে অন্তত শতাধিক কর্মী আহত হন। হামলাকারীদের অনেকেই কর্মী সভা লক্ষ্য করে বেপরোয়া ইটপাটকেল ও পাথরের টুকরা নিক্ষেপ করে। তারা সভার মঞ্চ, চেয়ার টেবিল, মাইক ভেঙ্গে ফেলে। এরপর সভাস্থলের সামনের রাস্তায় রাখা অন্তত ৩৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। অনেকগুলো ড্রেনে ফেলে দেয়। এসময় রাস্তার পাশের অনেক দোকানপাট ভাংচুর এবং টাকা পয়সা লুটপাট করা হয়।
বিএনপির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে হামলাকারী শাসক দলীয় ক্যাডাররা হেলমেট পড়ে দফায় দফায় নিউ মার্কেট, বায়তুন নূর শপিং কমপ্লেক্স ও কাঁচা বাজার এলাকায় লাঠিসোটা, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে। এ সময় গোটা এলাকায় চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনসাধারণ ও পথচারীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।
আহত বিএনপির কর্মীদের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এর আগে কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল ইসলাম জহির, সেয়দা রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, শের আলম সান্টু, বদরুল আনাম খান, মাহবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, কামরুজ্জামান টুকু, হাফিজুর রহমান মনি, কে এম হুমায়ুন কবির, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, শেখ জামালউদ্দিন, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, নাজমুদ হুদা সাগর, তারিকুল ইসলাম, খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, শফিকুল ইসলাম শফি, আলী আক্কাস, ফারুক হোসেন, আজিজা খানম এলিজা, অ্যাড. কানিজ ফাতেমা আমিন, হাসনা হেনা, শামসুন্নাহার লিপি প্রমুখ।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন অভিযোগ করেন, ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত কর্মীসভায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ক্যাডাররা অতর্কিতে হামলা চালিয়ে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হামলাকারীরা সভাস্থল ও সামনে রাখা মোটরসাইকেল ভাংচুর করে ড্রেনে ফেলে দেয়। হামলাকারীরা ছিল হেলমেট পরিহিত ও সশস্ত্র।
ঘটনার প্রতিবাদে ও পরিস্থিতির বিবরণ দিতে বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১১ টায় কে ডি ঘোষ রোডস্থ মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বিকেল ৪টায় ২৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।