ঊষার আলো ডেস্ক : খুলনায় শাসক দলীয় ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সরকারি জমি, জলাভূমি ও বিলান জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএনপি নেতারা বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৩ আগষ্ট ধারণকৃত এই ভিডিওতে দেখা গেছে, নগরীর রায়েরমহল বাঙ্গালবাড়ি এলাকার বাসিন্দা জনৈক মোঃ শাহজাহানের নেতৃত্বে কতিপয় শ্রমিক খুলনা সিটি কর্পোরেশনের রাযেরমহল ও ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের মধ্যকার একটি খাল ঘিরে ফেলে ভরাটের উদ্যোগ নিচ্ছে। খালটি ডুমুরিয়ার অন্তর্গত হওয়ায় স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তুহিন কেন কার নির্দেশে কাজ করা হচ্ছে জানতে চান? এ সময় প্রথমেই দলের তিন নেতার নাম উল্লেখ করেন। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার নির্দেশে তিনি খাল দখলের কাজ করছেন। ওই নেতা তাকে বলেছেন, এই কাজে তার সাথে দুই নেতা আছেন। চেয়ারম্যান তুহিন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন আইন করে নিষিদ্ধ করেছেন। কোন বিলান জমি, খাল বালি দিয়ে ভরাট করা যাবেনা বলে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই আইনের লঙ্ঘন করে কেন কাজ করা হচ্ছে, এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি উক্ত শাহজাহান।
বিবৃতিতে বিএনপি নেতারা বলেন, গায়ের জোরে নিশিরাতের ভোটের মাধ্যমে নানা অপকৌশলে দীর্ঘ ১৪ বছর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখা আওয়ামী লীগের অপশাসন, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, ভর্তি বাণিজ্য দেশকে এক নারকীয় পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গিয়েছে। বিদেশের বেগম পাড়ায় হাজার হাজার কোটি পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে। ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে দেশ। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম দেশের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিদেশী প্রভুদের কাছে ধর্ণা দেওয়ার বিবরণ এই অবৈধ সরকারের মন্ত্রী জনসম্মুখে ফাঁস করে দিয়েছেন।
ইতিহাসের নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের চাপে পিষ্ট হচ্ছে সর্বসাধারণ। জ¦ালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমেছে সর্বনিম্ন স্তরে। সরকার বাধ্য হয়েছে অফিস আদালত ও স্কুল কলেজের সময়সীমা কমাতে। দখলদার আওয়ামী লীগ সরকার যে মুহুর্তে ব্যর্থতার সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থান করছে, সেই সময়েও শাসক দলীয় লুটেরা নেতানেত্রীদের সর্বগ্রাসী লোভের করাল গ্রাস থেকে খাল-বিল-জলাভূমি কিছুই রক্ষা পাচ্ছেনা। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে উপকূলীয় জনপদ খুলনা অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরী জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাচ্ছে। যার প্রধান কারণ হিসেবে শহরতলী এলাকার নিম্মভূমি বেপরোয়াভাবে ভরাট করে দখলবাজি, বিভিন্ন অবৈধ হাউজিং প্রকল্প স্থাপন ও স্থাপনা নির্মাণকে দায়ি করছেন পরিবেশবীদরা। আর এই কাজে সর্বাগ্রে এগিয়ে রয়েছেন শাসক দলের শীর্ষ পদধারী নেতারা।
বিএনপি নেতারা বিবৃতিতে খাল দখলের ঘটনায় যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় এসব ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সামাজিক গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন, মহানগর আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, জেলা আহবায়ক আমির এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল ইসলাম জহীর, জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু প্রমূখ।