UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গবেষণার ফলাফল প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিতে হবে : উপাচার্য

pial
জুলাই ২৭, ২০২২ ৬:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের আয়োজনে ‘দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় ভেড়া উন্নয়ন বিষয়ক’ এক কর্মশালা আজ ২৭ জুলাই (বুধবার) সকাল ১০টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, মানবসভ্যতার শুরু থেকে যেসব প্রাণিকে গবাদি পশু হিসেবে পালন করা হয়; তার মধ্যে ভেড়া অন্যতম। কিন্তু আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে ভেড়ার মাংস খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। অথচ অনেক সময় আমরা বাজার থেকে খাসির মাংস হিসেবে কিনে আনা ভেড়ার মাংস খাচ্ছি। না জেনে ভেড়ার মাংস খাওয়ার চেয়ে জেনে ভেড়ার মাংস খাওয়া ভালো। এক্ষেত্রে সময়ের সাথে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আমিষের চাহিদা পূরণ ছাড়াও ভেড়ার বহুমাত্রিক ব্যবহার রয়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে ভেড়ার মাংস জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিতে হবে।

উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষকগণ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় স্থানীয় ভেড়ার সাথে মেহেরপুরে গাড়ল প্রজাতির ভেড়ার সংকরায়নের মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমিষের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এখন ভেড়া উৎপাদনের সাথে জড়িত খাদ্য, পরিবেশ ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আরও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এ অঞ্চলে চারণভূমি থাকলেও লবণাক্ততার কারণে ভালভাবো ঘাস জন্মায় না। যার ফলে ভেড়াসহ গবাদি পশুর খাদ্য জোগাড়ে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এসব সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে লবণসহিষ্ণু গাছের পাতা ও ফল ভেড়ার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা তা নিয়ে গবেষণার আহ্বান জানান। এতে ভেড়ার খাদ্য সমস্যা দূর হবে এবং খামারিরাও উপকৃত হবেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি সুন্দরবনের হরিণ লবণসহিষ্ণু কেওড়া গাছের পাতা ও ফল খেয়ে বেঁচে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে গবেষণায় দেশের মধ্যে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। যার মধ্যে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-গবেষকদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি গবেষণালব্ধ জ্ঞান যাতে প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিদের উপকারে আসে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি শিক্ষকদের চলমান গবেষণাকাজের প্রশংসা করেন এবং গবেষণায় আরও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল। কর্মশালায় সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম। তিনি গবেষণা প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং অর্জিত অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ত এক ফসলী এলাকায় অধিবাসীদের জন্য ভেড়া চাষ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেন প্রকল্পের সহযোগী গবেষক এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ সফিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জীব বিজ্ঞান স্কুলের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন প্রধান, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গ্রান্ট অব এ্যাডভ্যান্সড রিসার্চ ইন এডুকেশন (জিএআরই) ও বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এর অর্থায়নে ‘যথাযথ প্রজনন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের ভেড়ার উন্নয়ন’ শীর্ষক ৩ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন।

(ঊষার আলো-এফএসপি)