ফররুখ শাহরিয়ার পিয়াল : সারাদেশের মতো ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে জবুথবু খুলনার জনজীবন। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষরা। আর এই শীত নিবারণের জন্য কদর বেড়েছে পুরাতন গরম কাপড়ের। উষ্ণতা পেতে মানুষ ভিড় করছেন ফুটপাতের হকার ও পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। কিনছেন সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, ব্লেজার, শাল, কানটুপি ও হাতমোজা। প্রতিটি দোকানেই সাধারণ সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে বেচাকেনা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ চাহিদা বাড়ায় বেশি দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা। এতে করে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এদিকে, বিক্রেতাদের দাবি বেশি দাম দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশিতে।
নগরীর জব্বার মার্কেট, নিক্সন মার্কেট, ফেরিঘাট, ডাকবাংলা, শিব্বাড়ি, দৌলতপুর, খালিশপুর, বয়রা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাত, মার্কেট ও শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
আনোয়ারা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, পুরাতন গরম কাপড়ের বাজারে এসেছি ছেলের জন্য জ্যাকেট কিনতে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। চেষ্টা করছি কম দামে একটি ভাল জ্যাকেট খুঁজে বের করতে।
আরেক ক্রেতা খাদিজা আক্তার বলেন, জানুয়ারির শুরু থেকেই ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করেছে। এসময়ে শিশুরা বেশির ভাগই ঠাণ্ডা-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে বাচ্চাদের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছি।
নিক্সন মার্কেটে আসা মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, গরম জামা-কাপড়ের দোকানে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ৫০০ টাকার কাপড় এখন ৮০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাচ্ছেন দোকানিরা। মনে হচ্ছে মার্কেট থেকে না কিনে ফুটপাতে যেতে হবে। সেখানে অল্প দামে অনেক ভাল জামা-কাপড় পাওয়া যায়।
পুরাতন গরম কাপড় ব্যবসায়ী জহির বলেন, গতবারের চেয়ে এবার খুলনায় শীত বেশি পড়ছে। যার কারণে আমাদের বেচা-বিক্রিও ভাল হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এবারে মালের দামও কিছুটা বেশি। প্রতি বান্ডিলে (বেলে) দাম বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও প্রতি বান্ডিলে ৫/৭টা বাদ মাল রয়েছে। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, খুলনায় ৭ জানুয়ারি এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় খুলনায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার কথা। তাপমাত্রা কম থাকায় শনিবারও দেখা মেলেনি সূর্যের। আজ রোববার সূর্যের মুখ দেখা গেলেও শীতের তীব্রতা তেমন একটা কমেনি।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে চারদিনে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। ঘণ্টায় ৮-১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা শীতের তীব্রতা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
(ঊষার আলো-এফএসপি)