ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন খুলনা নগরীর সংলগ্ন মোস্তর মোড় থেকে রায়েরমহল ¯øুইস গেট পর্যন্ত জলিল স্মরণী সড়কের শেষ অংশ আনুমানিক মাত্র আধা কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত এক বছর ধরে সড়কটি এমনই পর্যায়ে পৌছেছে ওই সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। চলমান বর্ষায় সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে তাতে স্থায়ী জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পুরো সড়ক জুড়ে কাদা আর পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে। ৮০ মিটার চওড়া জলিল স্বরণীর সুফল ওই আধা কিলোমিটার সড়কের কারণে এলাকাবাসী পাচ্ছেন না। এতে করে সড়কে যান চলাচল করায় ছোট বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী জানান।
পিংকি ফিসের স্বত্ত¡াধিকারী শেখ মারুফুল ইসলাম জানান, দিনের বেলায় গল্লামারিকে জানযট ও বিধি নিষেধ থাকায় নগরীতে প্রবেশকারী ট্রাকগুলো এ সড়ক ব্যবহার করে বড় বাজার কদমতলা ষ্টেশন রোডে চলে আসে। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে প্রায় দেড়শত ট্রাক নগরীতে প্রবেশ করে। তারা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। আধা কিলো মিটার সড়ক পার হতে সময় নস্ট হয় প্রায় দু’ঘন্টা। গত তিন বছর ধরে সড়কটি এই করুণ অবস্থা। একই কথা বললেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ইসলাম মোল্লা। তিনি বলেন, গত দু’দিন আগে পাথর ভর্তি একটি ট্রাকের চাকা সড়কের গর্তে ডেবে গেছে। ওই ট্রাক গত দু’দিন ধরে সড়কে পড়ে আছে। কেউ ওঠাতে পারছে না। এতে যান চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। ওই এলাকার চা বিক্রেতা আঃ রব বলেন, গত কয়েক মাস আগে ওই সড়কে সাইকেল চালক পিছলে করে বিপরিত দিক থেকে আাস ট্রাকের চাকার নীচে চলে যান। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এভাবে প্রতিদিনই ছোট বড় দু’ঘটনা ঘটছে বলে কাভার্ড ভ্যান চালক ওমর ফারুখ জানান। তারা অবিলম্বে এলাকাবাসীকে মরণ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।
স্কুল শিক্ষক তাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, স্থানীয়ভাবে সড়কটির নাম বাইপাস সংযোগ সড়ক নামে পরিচিত। এ সড়কটি এতই বেহাল অবস্থা যানবাহন থাক দুরের কথা সাধারণ জনগণ পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারছে না। এতে করে চরম ভোগান্তি হচ্ছে এলাকাবাসীর। ওই এলাকার জেলে দেবু জানান, সড়কটির কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। বড় বড় গর্তে গাড়ি পরে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। অবিলম্বে এ সড়কটি মেরামতের দাবি জানান তিনি।
ওই এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক আবুল হাসান গাজী বলেন, সড়কটি মূলত ক্ষতি করেছে বালুবাহী ট্রাক আর জমি ব্যবসায়ীরা। এ লোকগুলো এলাকার বাসিন্দা নয়। তারা এখানে প্লট ব্যবসা করে। এদের কারণে সড়কটি আজ চলাচলে সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অবিলম্বে সড়কটি মেরামতের দাবি জানান এই নেতা।
বিশ্বাস প্রোপারটিজ-এর সিইও মোঃ আজগর বিশ্বাস তারা জানান, তিনি মন্দির থেকে মসজিদের সুইজগেট পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে রোলার করে ইট খোয়া দিয়ে ভিটুমিন দিয়ে সংস্কার করেছিলাম। তার পরবর্তীতে এই রাস্তাটির এমন অবস্থা হয়েছে যা অল্প খরচে সংস্কার সম্ভব না। যার জন্য এই রাস্তার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তাদেরকে আমি অবগত করেছি। তারা বলেছেন রাস্তাটি টেন্ডার হয়ে গিয়েছে এবং টেন্ডারে যে ঠিকাদার পেয়েছেন তার সাথেও আমি কথা বলেছি, তিনি আমাকে জানিয়েছেন এই রাস্তাটি সংস্কারে যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সে টাকা পর্যাপ্ত নয়। যার জন্য সেই ঠিকাদার রিটেন্ডার করার জন্য আবেদন করেছে। এ জন্য এই রাস্তাটি সংস্কারে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা চাই এ অঞ্চলের মানুষের চলাচলে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি কর্তৃপক্ষ দ্রæত আমলে এনে সংস্কার করবেন।
গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন বলেন, এ রাস্তাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, এটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এ রাস্তাটি দিয়ে শহর থেকে এই লিংক রোড হয়ে বাইপাসে এবং বাইপাস থেকে শহরে প্রবেশ করে রাস্তাটি। আমার নিজ উদ্যোগে রাভিস ফেলে সংস্কার করেছিলাম কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি সেই খরচের টাকা পর্যন্ত দেননি। তাকে বেহাল অবস্থার ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপে দিয়েছি কিন্তু আজও তিনি ব্যবস্থা নেননি। এটা মূলত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডির) অধীনে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাইলে দ্রæত সম্ভব। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে আমার ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই, আমি কাজ করতে পারছি না।
এলজিইডির ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কটি নকশা করা হয়েছে। এখন তা অনুমোদনের অপেক্ষায়।