ঊষার আলো রিপোর্ট : ঢাকা ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান যে দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত ছিলেন, এ নিয়ে বিগত সরকারের আমলেও একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পরিতাপের বিষয়, সেসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়নি। শনিবার খবরে প্রকাশ-তার প্রশ্রয়ে সংস্থাটির বিভিন্ন প্রকল্পসহ নানা খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয়েছে। তিনি নিজে ও বিগত সরকারের দোসরদের সঙ্গে নিয়ে চালিয়েছেন এ লুটপাট। তার মেয়াদে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও নগরবাসী এসব থেকে সুবিধা পাননি। উলটো পানি ও পয়ঃসেবার দাম বাড়িয়ে রাজধানীবাসীকে দুর্ভোগে ফেলেছেন তিনি। ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ঢাকা ওয়াসাকে শুধু রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানেই পরিণত করেননি, বৈদেশিক সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়ন করার নামে এ সংস্থাটি বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এই এমডি পলাতক রয়েছেন। সে অবস্থায় ১৪ আগস্ট তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন। অভিযোগ আছে, সরকার থেকে ২০ আগস্ট তার বিদেশযাত্রার ওপর ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর কার্যকর তৎপরতা নেই। যেহেতু তার সময়ে সংস্থাটিতে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার, সেহেতু এমন দুর্নীতিবাজ ও বেপরোয়া ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তাছাড়া তিনি ও সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তদের চুরি, অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে সরকার যে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং হচ্ছে; সেটিরও তদন্ত করে তা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
ভুলে গেলে চলবে না, ঢাকা ওয়াসা একটি সেবামূলক সংস্থা। ইতঃপূর্বে মূল্যস্ফীতির মাঝেও গ্রাহক পর্যায়ে কয়েক দফা পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু রাজধানীবাসীকে ন্যূনতম সেবা না দিয়ে অর্থ আদায়ের যে উদাহরণ তিনি ও তার সহযোগীরা সৃষ্টি করেছেন, দ্রুত এর বিচার না হলে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেবে। পাশাপাশি নগরবাসীকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করাও জরুরি। অতীত অনিয়ম-দুর্নীতি অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসাকে লাভজনক ও নাগরিকবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
ঊষার আলো-এসএ