ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনায় স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে মো. মিজানুর রহমান সবুজ (৩৪) নামে এক যুবককে হত্যায় শ^শুর, শ^াশুড়ি, স্ত্রী ও শ্যালকসহ ৬জনের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পুলিশ নিহতের শ্বাশুড়ি ও স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে।
গত শনিবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে নগরীর মিয়াপাড়া পাইপের মোড়ের নতুন রাস্তার গলির একটি বাড়ির সামনে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান সবুজ সুন্দরবনের ট্যুরিস্ট হিসাবে কাজ করতেন। চার বছর আগে নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে রেশমা আক্তারকে তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী রেশমা স্বামী সবুজসহ তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করত। মানসিক শান্তির জন্য সবুজ দু’ বছর আগে মিয়াপাড়া পাইপের মোড়ের নতুন রাস্তা এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী রেশমাকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে গিয়েও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করত রেশমা। এছাড়া রেশমা তার খালাতো ভাই আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে সবুজের সঙ্গে স্ত্রী রেশমার কলহ আরো বেড়ে যায়। এ সব নিয়ে গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে সবুজের সঙ্গে স্ত্রী রেশমার ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সবুজ কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে চলে যায়। এরপর সবুজ স্ত্রী রেশমার সঙ্গে ঝগড়ার ঘটনাটি তার ছোটভাই রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে জানায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সবুজ মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার পথে বাসা থেকে ১০০/১৫০ গজ দূরে পৌঁছালে শ^শুর বাড়ির লোকজন তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় । এতে সে গুরুতর জখম হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা সবুজকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের মা হোসনে আরা বলেন, ‘অনেক কষ্টে তিনি সন্তানদের মানুষ করেছেন। সন্তানদেরকে কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে শেখাননি। চার বছর আগে সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ের সঙ্গে তার ছেলে সবুজের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দু’বছর যেতে না যেতেই রেশমা পরিবারে অশান্তি শুরু করে দেয়। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে মিয়াপাড়া এলাকার ওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। তাদের সুরাইয়া আক্তার নামে দুই বছরের একটি শিশু কন্যা রয়েছে। তারপরও ছেলেকে শান্তি দেয়নি স্ত্রী রেশমা। শেষ পর্যন্ত আমার ছেলেকে স্ত্রী ও শ^শুরবাড়ির লোকজনের হাতে নির্মমভাবে মরতে হলো। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
এ ব্যাপার খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল-মামুন বলেন, এ ঘটনায় নিহত মিজানুর রহমান সবুজের মা হোসনে আরা বাদি হয়ে গতকাল রবিবার শ্যালক সাগর, শ^াশুড়ি নাসিমা বেগম, স্ত্রী রেশমা আক্তার, শ^শুর সিদ্দিকুর রহমান, সজিব ও সজলসহ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪জন আসামি করে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের মধ্যে শ্বাশুড়ি নাসিমা বেগম, ও সবুজের স্ত্রী রেশমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
