UsharAlo logo
সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন সুদহার বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে চায় আইএমএফ

usharalodesk
আগস্ট ১৪, ২০২৩ ১:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণে বেঁধে দেওয়া ৯ শতাংশের সীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে ইন্টারেস্ট রেট করিডরের মাধ্যমে ঋণের নতুন সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো ইন্টারেস্ট রেট করিডর কীভাবে বাস্তবায়ন করছে বা তার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি জানতে চায় সংস্থাটি। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চলমান মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন, নীতি সুদহারের করিডর প্রথা, সুদহারের সীমা প্রত্যাহার করে ইন্টারেস্ট রেট করিডর প্রথা ও ডলারের একক দাম বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন আইএমএফের চার সদস্যবিশিষ্ট টেকনিক্যাল টিমের প্রতিনিধিরা। আজ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের হিসাবায়ন, তারল্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবারও মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। এ সভা ধারাবাহিকভাবে চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটি আইএমএফের নিয়মিত সফরের অংশ। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি উন্নয়নে কাজ করতে চায়। এছাড়া নতুন করে আমরা ইন্টারেস্ট রেট করিডরে গিয়েছি। এটা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি হয়, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। বৈঠকে তারল্য ব্যবস্থাপনার বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন এই শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

এর আগে ১৮ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে নীতি সুদহারের করিডর প্রথা, সুদহারের সীমা প্রত্যাহার, ডলারের একক দাম, রিজার্ভের প্রকৃত হিসাবায়নসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের মধ্যে ছিল। ফলে পুরো মুদ্রানীতিটি হয়েছে আইএমএফের ছক অনুযায়ী। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি রোধে মুদ্রা সরবরাহনির্ভর নীতি থেকে সরে এসে সুদহার লক্ষ্য করে মুদ্রানীতি প্রণয়ন শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংকঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহার সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছর থেকে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে জানানো হয়, ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় হারের সঙ্গে ব্যাংকগুলো ৩ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যুক্ত করতে পারবে। এটাই হবে সুদের সর্বোচ্চ হার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলে গড় সুদ ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। সে হিসাবে আগস্টে ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১০ দশমিক ১০ শতাংশ আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তা ১২ দশমিক ১০ শতাংশ নির্ধারিত রয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) ও ভোক্তা ঋণের তদারকি খরচের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও ১ শতাংশ বেশি সুদ আরোপ করতে পারবে। ক্রেডিট কার্ডের সুদহার আগের মতোই ২০ শতাংশ থাকবে।

গত ৬ আগস্ট আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসে। তারা বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একাধিক বৈঠক করে। সফরের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক চলমান রয়েছে। ১৪, ১৬ ও ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এবং ২২ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ঊষার আলো-এসএ