খুলনায় দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের কালচারাল লিডারশিপ প্রোগ্রাম
দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ খুলনা মহানগরীর প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেছেন, সংস্কৃতি কেবলই আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের মনন ও চিন্তার উৎকর্ষ সাধনে নয়; জাতীয় জীবনের উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা না করতে পারলে একটি জাতির পরাজয় বা পতন ঠেকানো খুবই কঠিন। জায়নবাদী গোষ্ঠীর দোসররা আমাদেরকে সাংস্কৃতিকভাবে পরাস্ত করবার ষড়যন্ত্র সবসময় অব্যাহত রেখেছে। এখন আমাদের উচিত তাদের পাতানো ফাঁদে পা না দেওয়া। এবং এইসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা। আমাদের নিজস্ব সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শুক্রবার (২ মে) দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ খুলনাঞ্চলের উদ্যোগে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে দিনব্যাপী কালচারাল লিডারশিপ প্রোগ্রাম-২০২৫ এ প্রধান বক্তার বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ খুলনাঞ্চলের পরিচালক সাইফুল ইসলাম উজ্জ্বলের সভাপতিত্বে ও মিডিয়া প্রচার সম্পাদক সালমান রিয়াজের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ খুলনাঞ্চলের উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা জেলা সাংস্কতিক বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা সাংস্কতিক বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা উপাধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম মুকুল, বাগেরহাট জেলা সাংস্কতিক বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা রেজাউল করিম। আলোচক ছিলেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের সেক্রেটারি ড. মনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সঙ্গীত কেন্দ্রের সহ-সভাপতি আবু তাহের বেলাল। দারসুল কুরআন পেশ করেন খুলনা জেলা সাংস্কতিক বিভাগের উপদেষ্টা মাওলানা গোলাম সরোয়ার। এ সময় বাগেরহাট জেলার সাংস্কৃতিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম, খুলনা মহানগরী সাংস্কৃতিক সম্পাদক মীম মিরাজ হোসাইন, সাতক্ষীরা জেলার সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রভাষক মো. ওমর ফারুক, প্রেরণা সাহিত্য সংসদ খুলনার সভাপতি নাজমুল কবীর, সেক্রেটারি শাহ মাখদুম, খুলনা জেলার জাহানাবাদ সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক মাওলানা হেলাল উদ্দিন, সাতক্ষীরা জেলার পূর্বাভাস সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি এডভোকেট আবু তালেব ও সেক্রেটারি ড. ইউনুস আলী, বাগেরহাটের উপমা সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক অধ্যাপক হায়দার আলী ও সহকারী পরিচালক মোড়ল শরীফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশ অপসংস্কৃতিতে ভরে গিয়েছিলো। কোথাও ইসলামিক জলসা হলেই সেখানে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতো। কোথাও শর্তসাপেক্ষে ওয়াজ মাহফিল ও জলসাা করতে দিতো, আবার কোথাও দিতোই না। কারণ সংস্কৃতি জাতিসত্ত্বাকে উজ্জীবিত করে। যাতে মুসলমানরা সংস্কৃতি চর্চা করে জাতিকে উজ্জীবিত করতে না পারে সেই চেষ্টাই করছিলো ফ্যাসিবাদীরা। তখন সর্বত্র অপসংস্কৃতিতে সয়লাব ছিলো। সেই অপসংসস্কৃতির মোকাবেলায় কাজ করেছিলো শিল্পী, কবি ও সাহিত্যিকরা। জুলাই আন্দোলনে তাজা রক্ত দিয়ে সেই অবস্থার পরিবর্তন করেছে ছাত্র-জনতা।
আবু তাহের বেলাল বলেন, ইসলামী আন্দোলনের ক্ষেত্রে সাহিত্য-সংস্কৃতির ভূমিকা অপরিসীম হিসেবে কর্মীদের হৃদয়ে গেঁথে নিতে হবে। বিদ্রোহী বা চেতনার সূরে কাজী নজরুল ইসলামের পরেই কবি মতিউর রহমান মল্লিকের অবস্থান। তিনি আজীবন চেষ্টা চালিয়েছেন তৃণমূলে সুস্থ সংস্কৃতির প্রচলন করার। তারই উত্তরসূরী বা কর্মী হিসেবে সর্বশ্রেণির মানুষের কাছে আমাদের সংস্কৃতির ধারা পৌঁছে দিতে হবে।
ড. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আপনারা যারা আমার সামনে বসে আছেন, তারাই তো সারাদেশে শুদ্ধ ও সুস্থ ধারার সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রত্যেককে উন্নতমানের নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের সমাজের মানুষকে নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মোটিভেশন চালাতে হবে। আমরা যদি সক্ষমভাবে এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হই। অথবা আমাদের দায়িত্বে অবহেলা করি তাহলে আমাদের আগামীর প্রজন্ম আরো ভয়াবহ কোন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
ঊআ-বিএস