UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটিয়ায় আলেমকে নির্যাতন করে খুলে নেওয়া হলো নখ

usharalodesk
মার্চ ১৯, ২০২৪ ১১:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : চট্টগ্রামের পটিয়া আল জামেয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায়  জোর করে পদচ্যুত মাওলানা ওবায়দুল্লা হামজার সমর্থক  এক আলেমকে নির্যাতন করে আঙুলের নখ খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার রাত সাড়ে ৯টায় মাদ্রাসাসংলগ্ন রাস্তা থেকে সোহরাব হোসেন আইমান নামের ওই আলেমকে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে এ নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় বর্তমান মহাপরিচালক আবু তাহের নদভীপন্থি কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন।

এর আগে আরিফ নামের অপর এক ছাত্রকে পিটিয়ে তার দুটো কিডনি নষ্ট করা হয়। সে দীর্ঘদিন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় আছে। এসব ঘটনায় সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ। তাতে দোষীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা মোস্তফা কামাল ফয়সালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নেতারা বলেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাতে মাদ্রাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে মহাপরিচালক ওবাইদুল্লাহ হামযাহর কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। বর্তমান দখলদার ও অবৈধ মুহতামিম আবু তাহের নদভী পেটুয়া বাহিনীকে দিয়ে প্রতিবাদী মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক ও আলেমকে ধরে এনে মাদ্রাসার ভেতরে নির্যাতন-নিপীড়ন করছেন।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার বর্তমান মহাপরিচালক আবু তাহের নদভীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।

জানা গেছে, রোববার রাতে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি দোকান থেকে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার অনুসারী ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলা পূর্বের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সরোয়ার হোসেন আইমনকে মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালক মাওলানা আবু তাহের নদভীর অনুসারী ১০-১২ জন ছাত্র জোর করে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে মারধর করে এবং হাতের একটি আঙুল থেকে নখ উঠিয়ে নেয়।

পরে আহতাবস্থায় তাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তার পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন জানান, ওই ঘটনার পর আহত আলেমের পক্ষ থেকে আবু তাহের নদভীপন্থিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে মানববন্ধনে পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেন, পটিয়া মাদ্রাসায় এখন ছাত্র নামধারী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইএস মতাদর্শী একদল উগ্রপন্থীকে লালন-পালন করা হচ্ছে। এদেরকে ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংযমের মাস রমজানের পবিত্রতাকে ভূলুণ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে দখলদাররা ধর্মীয় অনুভূতিশূন্য।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের (ইত্তেহাদ) সংবিধান লঙ্ঘন করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শুরার নামে প্রহসনের মাধ্যমে হেফাজতের এক মাফিয়া চক্র আবু তাহের নদভীকে মুহতামিম ঘোষণা দিয়েছেন। এই আবু তাহের নদভী ঢাকা-কক্সবাজার ও যশোরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ধর্মের দোহাই দিয়ে এবং সুদমুক্ত সঞ্চয়ের ওয়াজ করে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক বানিয়ে গরিব গ্রাহকদের সঞ্চিত শত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। এসব অভিযোগে আদালতে প্রায় দুই ডজন মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা ইয়াসিন আমিনীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা উজাইল্লাহ, মাওলানা সগির আহমদ চৌধুরী, কারী শফিউল আলম, মাওলানা আবুল কালাম, একরাম হোসেন, হাফেজ মাওলানা জিয়াউর রহমান মাওলানা আনাস, মাওলানা জসিমুদ্দীন, মাওলানা নুরুল আজীম, মাওলানা তরিকুল ইসলাম, মাওলানা ওসমান, মাওলানা মামুনুর রশীদ, আবদুল কাদের, হুমায়ুন কবীর ও মাওলানা মাহমুদুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা আগামী ৪৮ ঘণ্টার দায়ীদের গ্রেফতার, পটিয়া মাদ্রাসায় নিয়ম বহির্ভূত শুরা বাতিল করে ইত্তেহাদের অধীনে শুরা আহবান ও আন্দোলনের নামে হামলা-ভাঙচুর করে মাদ্রাসার সম্পদ বিনষ্টকারীদের বহিষ্কার করার দাবি জানান।

ঊষার আলো-এসএ