ঊষার আলো ডেস্ক : খুলনাস্থ সুন্দরবন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি আয়োজিত চাকরী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, পদ্মাসেতু চালু হলে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা লে যে শিল্প বিপ্লব ঘটবে তখন প্রয়োজন হবে বহু দক্ষ জনশক্তির। সুতরাং এখন থেকেই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। চাকরী মেলার মাধ্যমে চাকরীদাতা প্রতিষ্ঠান ও চাকরী প্রত্যাশীদেও মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা সম্ভব বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
সোমবার (৩০ মে) সকালে নগরীর বয়রাস্থ সুন্দরবন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র মেইন ক্যাম্পাসে এ চাকরী মেলার উদ্বোধন হয়। এটুআই, ইউনিসেফ ও ইউএনডিপি এক্সেলেটর ল্যাব এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ চাকরী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো: ইসমাইল হোসেন।
সুন্দরবন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যক্ষ এস এম মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, এটুআই প্রকল্পের স্ট্রাটেজি এন্ড ইনোভেশন স্পেশালিষ্ট আসাদ-উজ-জামান, ইউনিসেফ’র চীফ ফিল্ড অফিসার মো: কাউসার হোসাইন, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল’র নবযাত্রা প্রকল্পের টিম লিডার পারভেজ কামাল পাশা ও ইউএনডিপির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বেকার যুব সমাজকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এক কথায় একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় নিজেদেরকে শিক্ষিত করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের জনশক্তির কর্মদক্ষতা ভালো। দেশে-বিদেশের চাকরীর বাজার অনেক বড়। শুধু দরকার দক্ষতা ও যোগ্যতার পাশাপাশি কৌশলী হওয়া। সর্বোপরি পেশাদারিত্বেও মাধ্যমে নিজেদেও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারলেই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে সমাজ ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নিজেদেও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় খুলনা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য খুলনা চেম্বারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
এটুআই’র স্ট্রাটেজি এন্ড ইনোভেশন স্পেশালিষ্ট বলেন, প্রতি বছর দেশের শ্রম বাজারে ২০ লাখ লোক আসে। তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দেশের ১৩ হাজার প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। খুলনার সুন্দরবন ইনস্টিটিউট তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া এ ধরনের চাকরী মেলার মধ্যদিয়ে চাকরী প্রত্যাশী ও চাকরীদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে তা পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে বিগত দু’বছরে দেশে অন্তত: দুই কোটি মানুষ চাকরী হারিয়েছে। বিশ্বের ৫৩টি দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেসব গাড়ি চলে তার জন্য দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। এজন্য যাদের বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা আছে তাদেরকে ওই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সম্ভব হলে বিশ্ব শ্রম বাজারেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে।
ইউনিসেফের চীফ ফিল্ড অফিসার বলেন, সরকার ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী যুব সমাজকে লক্ষ্য করে তিনটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। অর্থাৎ ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী কেউ শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণের বাইরে থাকবে না।
চাকরী মেলায় আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষুদ্র, মাঝারী ও ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্টল দেয়া হয়। ওইসব স্টলে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরী প্রত্যাশীদের পক্ষ থেকে জীবন-বৃত্তান্ত দেয়া হয়। যেগুলো যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগপত্র দেয়া হবে। এ মেলার মধ্যদিয়ে দুই শতাধিক লোক কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন বলেও আশা করেন আয়োজকরা।
(ঊষার আলো-এফএসপি)