সোমবার সন্ধ্যায় আশকোনা হজ ক্যাম্পে এ বছরের হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে এবারের পবিত্র হজযাত্রা। রাত ২টা ১৫ মিনিটে ৩৯৮ হজযাত্রী বহনকারী প্রথম উড়োজাহাজটি জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ হজযাত্রীর পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে যাওয়ার কথা। হজ ফ্লাইট চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। জানা যায়, রাজধানীর আশকোনার হজ ক্যাম্পেই ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাওয়া যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। সৌদি আরব থেকে আসা ইমিগ্রেশনের ৭৫ সদস্যের একটি দল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসে সেদেশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবে। এতে হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। অবশ্য ফেরার সময় হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সৌদি আরবেই করতে হবে। আর সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে গমনকারী যাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন সেদেশেই অনুষ্ঠিত হবে। অবশ্য বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কমবেশি ৯৫ শতাংশই সৌদি আরবে যান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে। এবারও সর্বোচ্চসংখ্যক হজযাত্রী আশকোনা হজ ক্যাম্প হয়ে সৌদি আরবে যাবেন। জানা গেছে, এবার তিনটি বিমান সংস্থা হজযাত্রী পরিবহণ করবে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে হজযাত্রী পরিবহণ করবে। সৌদি এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাস এয়ার শুধু শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে যাত্রী পরিবহণ করবে।
হজ সক্ষম মুসলমানদের জন্য সাংবাৎসরিক ফরজ ইবাদত। এর সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি ও বিশ্বাস জড়িত। অতীতে হজ গমনেচ্ছুরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। কখনো কখনো অনেকে প্রতারণারও শিকার হয়েছেন। তাই হজযাত্রা নির্বিঘ্ন করার দাবি দীর্ঘদিনের। এবার হজ গমনেচ্ছুদের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হলে তাদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বিশেষ করে ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাবে। এছাড়া হজযাত্রীদের সেবা সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘লাব্বাইক অ্যাপ’। সোমবার এর উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ধর্ম পালন ও স্বাস্থ্যসেবায় সহায়ক নানা ফিচার থাকায় এই অ্যাপ হজযাত্রীদের একাগ্রচিত্তে হজ পালনে অবদান রাখবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন (১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রতিবারই হজ ব্যবস্থাপনায় নানা ধরনের ত্রুটি লক্ষ করা যায়। এসব ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে হজযাত্রীদের পড়তে হয় নানা দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনায়। ফ্লাইট বিপর্যয় থেকে শুরু করে হজ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়া, সৌদি আরবে ঠিকমতো থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা না করা ইত্যাদিসহ আরও নানা অব্যবস্থাপনার কথা জানি আমরা। এ বাস্তবতায় হজ গমনেচ্ছুদের সেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে এবার কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে হজ ব্যবস্থাপনায়। এর ফলে হজযাত্রীরা এবার অধিকতর নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
ঊষার আলো-এসএ