UsharAlo logo
শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইকগাছায় শিশু রোগী মৃত্যুর ঘটনায় শাপলা ক্লিনিক সিলগালা

usharalodesk
জুন ১৯, ২০২১ ৮:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছার আলোচিত শাপলা ক্লিনিকে আবারো শিশু রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অনভিজ্ঞ চিকিৎসকদ্বারা ভুল অপারেশন করায় শুক্রবার (১৮ জুন) ভোর ৫টার দিকে ৭ বছরের শিশু আবু সুফিয়ানের মৃত্যু হয় বলে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছে। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম বন্ধ (সিলগালা) করে দিয়েছেন। একই সাথে চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ক্লিনিক মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অত্র ক্লিনিকে এর আগেও কয়েকজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
জানাগেছে, পৌরসভার তেলপাম্প সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে জনৈক ব্যক্তির বাড়ী ভাড়া নিয়ে তাপস কুমার মিস্ত্রী গড়ে তুলেছেন শাপলা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। পার্শ্ববর্তী দাকোপ উপজেলার গড়খালী গ্রামের সালাম সরদারের শিশু পুত্র আবু সুফিয়ান (৭) কে এ্যাপেনডিসাইটিস অপারেশন করার জন্য শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে অত্র ক্লিনিকে ভর্তি করে। বিকাল ৫টার দিকে ক্লিনিকের মালিক তাপস কুমার মিস্ত্রী সাতক্ষীরা থেকে আসা ফারুক হোসেন নামে একজন নামধারী সহকারী চিকিৎসকদ্বারা শিশু আবু সুফিয়ানের অপারেশন করে। এরপর ভোর ৫টার দিকে শিশুটি নড়াচড়া বন্ধ করে দিলে তার স্বজনরা কোন ডাক্তার ও নার্সকে খোঁজ না পেয়ে ক্লিনিকের মালিককে খবর দেয়। তখন ক্লিনিকের মালিক তাপস এসে তড়িঘড়ি করে শিশুটিকে শনিবার ভোর ৬টার দিকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে খুলনায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এ্যাম্বুলেন্স রওনা হওয়ার মুহূর্তে শিশুটির নানা আশরাফ হোসেন দেখেন শিশুর শরীর সম্পূর্ণ ঠান্ডা এবং কোন রেন্সপন্স করছে না। তখন তিনি শিশুটি মারা গিয়েছে বলে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় এবং রোগীসহ এ্যাম্বুলেন্সটি খুলনায় যাওয়া থেকে বিরত রাখে। এরপর তেলপাম্পে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে কান্নাকাটি শুনে এলাকার লোকজন জড়ো হয় তেলপাম্পে। রোগী মৃত্যুর ঘটনায় কিছুটা উত্যপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে। এ সময় স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে ক্লিনিকের আশপাশ এলাকা। শিশুটির মা বিউটি আক্তার অভিযোগ করেন, সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ চিকিৎসকদ্বারা অপারেশন করায় এবং চিকিৎসকদের অবহেলায় শিশু পুত্র সুফিয়ানের মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার শিশু পুত্রের মৃত্যু ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। পরে খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেন।
এ সময় ক্লিনিকে কোন চিকিৎসককে না পেয়ে এবং প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম বন্ধ অর্থাৎ ক্লিনিকটি সিলগালা করে দিয়ে ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন সকল রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থান্তর করেন। একই সাথে ক্লিনিক মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। উল্লেখ্য, এরআগেও অত্র ক্লিনিকে কয়েকজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিকের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ক্লিনিকটি চালু করা হয়। সর্বশেষ শিশু সুফিয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আর কত প্রসুতি মায়ের এবং শিশু মৃত্যু ঘটলে শাপলা ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে?
(ঊষার আলো-এমএনএস)