UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাটকল চালু, বকেয়া পরিশোধ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও লকডাউনে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে

ঊষার আলো
এপ্রিল ১২, ২০২১ ৫:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

                                    নাগরিক পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা

ঊষার আলো প্রতিবেদক : রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু, আধুনিকায়ন, বদলী-দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ, রমজানে চাল-ডাল-তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে আজ (সোমবার) বেলা ১১টায় অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের আহবায়ক এড. কুদরত-ই-খুদা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২০২০ সালের ২রা জুলাই সরকার ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেয়। পাটকল বন্ধের এই সিদ্ধান্ত স্থায়ী, বদলী ও দৈনিকভিত্তিক প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ওপর আঘাতে তারা চরম হতাশার শিকার হন। বকেয়া পাওনা প্রদানের ক্ষেত্রেও শ্রমিকেরা সরকারের প্রতারণামূলক ফাঁদে পড়ছেন। ১৮ হাজার ২ শত বদলী শ্রমিক ও ৭ হাজার দৈনিকভিত্তিক শ্রমিক এখনও পর্যন্ত অর্থ পাননি। বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফায় লকডাউন চলছে। চলমান এই লকডাউনের সময় সরকারের নিকট পাটকল শ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষদের খাদ্যদ্রব্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, রমজানে চাল-ডাল-তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের বদলী-দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের বকেয়া সঠিক হিসাব অনুযায়ী এককালীন পরিশোধ এবং নামের ভুল দ্রুত সংশোধনপূর্বক কয়েক হাজার স্থায়ী পাটকল শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধের দাবী করা হয়। পাটকলের সাথে একইভাবে চিনিকল বন্ধ করায় দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা কল্পনাতীত বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১০ মাস ব্যাপী ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ। ১০ মাসে পরিষদ মানবপ্রাচীর, নাগরিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা, পদযাত্রা, অবস্থান, গণমিছিল, সেমিনার, সংহতি সমাবেশ, শ্রমিক জনসভা, ডিসি অফিস ঘেরাও, ভুখা মিছিল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। অবরোধ পালন করতে যেয়ে পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক নাগরিক পরিষদের ১৪ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বক্তব্যে আরো বলা হয়, করোনা ভাইরাসের ভয়ঙ্কর থাবায় সাধারণ মানুষ চরমভাবে উৎকণ্ঠিত, একই সাথে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে নিরন্ন মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর রমজান এলে নিত্যপণ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি একটি প্রচলিত রীতিতে পরিণত হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধি করে ফায়দা লোটে অপরদিকে টিসিবি’র পণ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, পরিমাণ কমিয়ে দেয়া, বিক্রয় কেন্দ্রের স্থান অর্ধেক করা ও বিক্রয় সামগ্রীর পরিমাণ কম করে অসহায় শ্রমজীবী মানুষের জীবনে মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মত অবস্থা তৈরি করেছে। পাটকল শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষসহ গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের খাবারের ব্যবস্থা না করে লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করা সম্ভব নয়, সঙ্গত ও যুক্তিযুক্ত নয়। দুই দিন পরই রমজান মাস তারপর ঈদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত ১ বছর ধরে অবর্ণনীয় অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছে। ঘরে খাবার নেই। সন্তানদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। কর্মহীন শ্রমিক পরিবারের চিকিৎসা বা ওষুধ কেনার ন্যূনতম সামর্থ নেই। করোনার ভয়াবহতায় বিকল্প কর্মসংস্থান নেই। তাই পরিষদের পক্ষে সরকারের নিকট দাবী জানানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের বদলী দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের বকেয়া প্রদান করতে হবে। অবিলম্বে পাটকল চালু ও আধুনিকায়ন করতে হবে। চাল-ডাল-তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম কমাতে হবে ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ সময়ে অন্যানের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন, সদস্য সচিব এস এ রশীদ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. আ ফ ম মহসীন, বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) খুলনা জেলা সভাপতি মোজাম্মেল হক খান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ খুলনা জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কাজী দেলোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান মিঠু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা সভাপতি আব্দুল করিম, টিইউসি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম চন্দন, গণসংহতি আন্দোলন নেতা সেলিম বকুল, আল আমিন শেখ, শ্রমিক নেতা শামসেদ আলম শমশের, শামস শারফিন শ্যামন প্রমুখ।

(ঊষার আলো-আরএম)