ঊষার আলো রিপোর্ট : পুলিশ হাতে ‘আটক’ হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার গভীর রাতে আটকের বিষয়টি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুমন।
সোমবার দিবাগত রাতে ১টা ১৮ মিনিটে সুমন লিখেন, ‘আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই’।
এতে গুঞ্জন তৈরি হয়, হয়তো পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তার ফেসবুকে পোস্টে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। মুহুর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রায়ই বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যু নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলতেন ব্যারিস্টার সুমন। এবার নিজের আটকের খবরটি নিজেই ফেসবুকে জানালেন।
গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মনােনয়ন পাননি সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত এই আইনজীবী। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে হবিগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান।
গত ২০ আগস্ট অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিওবার্তায় দুঃখ প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সুমন। ওই সময় ভিডিওতে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি। তিনি দাবি করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলেন।
তবে সরকার পতনের আগে সুমনের কন্ঠে ছিল ভিন্ন সুর।
ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, আমি সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য এখানে আসিনি। এখন ফেসবুকটা এমন অবস্থা, আমাকে তো প্রধানমন্ত্রী ফেসবুক এমপি বলতেন। আমি ফেসবুক এমপি হিসেবে থাকতাম এবং সরকারের বিরুদ্ধে আজকে একটা কথা বললে কালকে বলবেন সুমনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। আমি তো ওই প্রধানমন্ত্রী হতে এখানে আসিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, আমার রাইট, রঙ সব বোঝার ক্ষমতা আছে। আমি পড়াশোনা করে ব্যারিস্টার হয়েছি। আপনারা বলতে পারেন, আপনার পড়াশোনার মান খুবই খারাপ। কিন্তু এটা আপনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই? আপনারা প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করাতে চান, কিন্তু আপনাদের আন্দোলন তো পুরোটাই জামায়াত-বিএনপির হাতে চলে গেছে। তাইলে আপনারা জামায়াতকে আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন, তারেককে ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন। তিনি তো দণ্ডপ্রাপ্ত।
এক দফার সমালোচনা করে সুমন আরো বলেছিলেন, আজকে আপনারা একদফা চাচ্ছেন। আপনাদের একদফা কি? মনে করেন আপনাদের একদফা আমি মেনে নিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে আপনি পদত্যাগ করেন। ছাত্ররা মারা যাচ্ছে। স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে আমি তাকে বললাম। আজ যা একদফা দিচ্ছেন, কালকে তারা আরেকটি দফা দিয়ে বললেন, আপনি আওয়ামী লীগ করা বন্ধ করেন। এ দেশে কেউ আওয়ামী লীগ করতে পারবেন না। দুদিন পরে বলবে এ দেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকবে না। এদের একটার পর একটা দফা সারেন্ডার করে মেনে নেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়। আমরা তো সংঘত চাই না। আমি একটা প্রাণহানিরও পক্ষে না।
ঊষার আলো-এসএ