UsharAlo logo
সোমবার, ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পেঁয়াজের দামের ঝাঁজে দিশেহারা ক্রেতা

koushikkln
ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২ ১০:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আশিকুর রহমান : মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে নগরীর পাইকারী বাজারে ২২ টাকার পেঁয়াজ এখন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনায় সোহাগা পেঁয়াজ আাবার পাইকারী বাজার ঘুরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫/৫০ টাকায়। রাতারাতি হঠাৎ করে পেয়াজ দাম এমন দাম বৃদ্ধির কারণে নাজেহাল অবস্থায় ক্রেতারা। আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে পেয়াজের দাম এমনই উর্দ্ধমুখী হচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ভারী বর্ষার কারণে প্রান্তিক কৃষকদের ব্যাপক পেঁয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এর কারণে বাজারে ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে। কয়েকদিন পরই ভাতি বা বীজের পেঁয়াজ সরবরাহ শুরু হলে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

ব্যবসায়ী সুত্রে জানা যায়, ১৫ দিন আগে নগরীর পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের (কালি কাটিং) দাম ছিল ২২ টাকা কেজি। যা বর্তমানে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫ হতে ৪০ টাকা দরে। ১৫ দিনের ব্যবধানে বর্তমান পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুন দামে।

জিৎ ভান্ডার মালিক সমীর সাহা জানান, বর্তমানে পাইকারী বাজারে পেঁয়াজ আসছে নাটোর, গোপালগজ্ঞ, শৈলকূপা, ফরিদপুর, পানসাসহ বিভিন্ন এলাকা হতে। এই পেঁয়াজ কালি কাটিং। প্রান্তিক কৃষকেরা মাঠ পর্যায়ে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজের আবাদ করে। এবার চাষও অনেক সন্তোষজনক হারে হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ তথা ভারী বর্ষণের কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত ডুবে যায়। যার দরুণ কৃষকেরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উৎপাদন মাত্র কমে গিয়ে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। উৎপাদিত পেঁয়াজ মোকামে বেশি দামে বিক্রির কারণে পাইকারী ও খুচরা বাজারে প্রভাব ফেলেছে। তবে কয়েকদিন পর ভাতি পেঁয়াজ বাজারে এলে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।

আড়ৎদার কাঞ্চন বলেন, আমরা সাধারনত ঝিনাইদাহের শৈলকূপা, কুষ্টিয়ার লাঙ্গনবান, ফরিদপুর মোকাম হতে পেঁয়াজ সরবরাহ করি। মোকামেই পেঁয়াজের দাম বাড়তি, বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ।

খুলনার ব্যবসায়ী পার্থ জানান, বর্তমানে ব্যাপারীরা বিভিন্ন এলাকা হতে কৃষকদের নিকট বেশি দামে পেঁয়াজ কিনছে, তাই বাজারে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ মুকামে দাম বেশি। কৃষকরা ক্ষেত হতে পেঁয়াজ কম তুলছে । যে কারণে মুকামে দাম বেশি, মুকাম ঘুরে বাজারে তাই পেঁয়াজের দাম তাই বেশি মনে হচ্ছে।

দেয়ানা ঋষিপাড়ার ব্যবসায়ী এল. রহমান স্টোরের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, আমার মুদি দোকান আছে। ১৫ আগে পাইকারী বাজার হতে ২২ হতে ২৩ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে এনেছি। বর্তমানে ৪০ টাকা দরে কিনে আনতে হচ্ছে। আর দোকানে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। দোকানে খুচরা ক্রেতাদের নিকট কত করে বেচবো। দোকানে খুচরা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছি।
বাজারে আসা ক্রেতা শফিকুল বলেন, বাজারে সবজির দাম কিছুটা সহনীয় থাকলেও হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছরই রমজানের আগে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে রমজানের আগে কেউ সিন্ডিকেট করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।

ক্রেতা আকতারুজ্জামান বলেন, বাজারে সবজির দাম লাগামহীন ঝিঙে, পটল, বেগুন, লাউ, লালশাক, সীম, চাল কুমড়াসহ প্রভৃতি সবজির দাম বেশি। তারপর আবার কয়েকদিনের ব্যবধানে পেয়াজ এখন ৪০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। তাই যেন পেঁয়াজের ঝাজের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা যেন বিক্রিতার নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে।

দৌলতপুর খুচরা বাজার কাচাঁমাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ব্যবসায়ী পলাশ শেখ বলেন, চাষীদের উৎপাদিত পেঁয়াজ মোকামে বেশি দরে বিক্রি করছে। যে কারণে পাইকারদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে আনতে হচ্ছে। যার প্রভাব পাইকারী বাজারের ঘুরে খুচরা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতাদের উপর পড়ছে।