তথ্যবিবরণী : সমাবেশ, বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে সহায়ক উপকরণ বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) খুলনায় ৩১তম আন্তর্জাতিক ও ২৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পরিবর্তনমূখী পদক্ষেপ: প্রবেশগম্য ও সমতাভিত্তিক বিশ^ বিনির্মাণের উদ্ভাবনের ভূমিকা’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ততৃায় সিটি মেয়র বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। যথাযথ পরিচর্যা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ দিলে তারাও দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে এবং জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক শিশু বিশেষ গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। প্রতিবন্ধীরাও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের কাজ হলো তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে এগিয়ে আসা। তিনি আরও বলেন, সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের জনগণ, সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দেশ-বিদেশের সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান সিটি মেয়র।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুকুল কুমার মৈত্র’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় সমাজসেবা দপ্তরের পরিচালক মোঃ আব্দুর রহমান, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ অরুণ কান্তি মন্ডল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির। স্বাগত জানান জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক খান মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক বায়েজিদ খান। জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা দপ্তর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভায় জানানো হয়, সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ৫৪টির বেশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সারাদেশে থেরাপি সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদানে একশত চারটি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র কাজ করছে। খুলনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ৪৮ হাজার ১৪৪ জন প্রতিবন্ধীকে সুবর্ণ নাগরিক পরিচয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য সহায়তা নিশ্চিত করেছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় জেলায় সাতশত ২৭জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বছরে মোট ৮৮ লাখ টাকার বেশি সহায়তা পাচ্ছেন। চলতি অর্থবছরে জেলার ৩৮ হাজার ৬৪৬ জন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মাসিক ৮৫০ টাকা হারে ভাতার আওতায় মোট ৩৯ কোটি ৪১ লাখ ৮৯ হাজার দুইশত টাকা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠান শেষে মেয়র ৮০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাঝে সহায়ক উপকরণ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ফ্যামিলি কিট বিতরণ করেন।
এর আগে মেয়রের নেতৃত্বে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়।
(ঊষার আলো-এফএসপি)