ঊষার আলো রিপোর্ট : মাদক বিক্রিতে নিষেধ করায় খুন করা হয় খালিশপুর কাশিপুর এলাকার চায়ের দোকানী শেখ লিটনকে। আদালতে এমনি বিবরণ দিলেন এ মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রিয়াজ মুন্সী। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় বিচারিক জবানবন্দী প্রদান করেন রিয়াজ মুন্সী। এ জবানবন্দীর মধ্য দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী আর বাদীর এজাহারে হত্যার কারণ একই বলে সনাক্ত হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত লিটনের চায়ের দোকানের পাশে আসামিরা মাদক দ্রব্য বিক্রি করতো। প্রায়ই লিটন তাদের এখানে মাদক বিক্রি করতে নিষেধ করতো। আর এ নিষেধ তার জীবনে কাল হয়ে দাড়ায় ১৭ এপ্রিল দিবাগত গভীর রাতে। রাত ১ টায় দোকান বন্ধ করে লিটন তার সহযোগী রিয়াজ ও মিজানকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। উত্তর কাশিপুর বাইতিপাড়া কবরখানা রোড লাভবু শরীফের বাড়ির সামনে পৌছানো মাত্র সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তাদের ওপর চাইনিজ কুড়াল, সেভেন গিয়ার ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা লিটনকে খুন করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। সন্ত্রাসীরা তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। রিয়াজ ও মিজান ভয় পেয়ে পাশের বাড়ি আশ্রয় নিয়ে আমিন ও হৃদয়কে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করে। তারা উভয় ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে। ওই ঘটনার পর এলাকাবাসী লিটন ও আমিনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চায়ের দোকানী লিটন রাত ২ টায় মৃত্যুবরণ করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নিমাই চন্দ্র কুন্ডু বলেন, এটা একটা নির্মম হত্যাকান্ড। রিয়াজ মুন্সি এ হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী। আসামিদের ভয়ে মামলার ঘটনা জানা সত্ত্বেও তা পরিবর্তন করতে পারে। তাই মামলার প্রয়োজনে তার জবানবন্দি ১৬৪ ধারা মতে গতকাল মঙ্গরবার (২০ এপ্রিল) লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
এ হত্যা মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যে ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এরমধ্যে দু’ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তারা হলো, নগরীর বাস্তুহারা ১২ নং রোডের বাবুল শেখের ভাড়াটিয়া বাবু শেখের ছেলে রাজু (২৪) ও উত্তর কাশিপুর বাইতিপাড়া রেল লাইন এলাকার লোকমান শেখের ছেলে আসলাম (২০)। অপর পাঁচ আসামি দু’দিনের জন্য পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে। তারা হলো আলামিন, আব্দুল্লাহ, হেলাল, মাহির ও আশিকুর রহমান। বুধবার এদের রিমান্ড শেষ হবে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।
নিহত লিটনের ছোট ভাই আল আমিন জানান, মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করার জন্যই তাকে প্রাণ দিতে হলো। ভাইয়া ইতোপূর্বে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় মাদক সম্রাট আব্দুল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে ভাইয়াকে একাধিকবার হুমকি দেয়। এছাড়া পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে তারা শুধু মামলার মূল আসামি নয়। অবিলম্বে মূল আসামীদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানান তিনি।
(ঊষার আলো-এমএনএস)