খালের মাটি ইটভাটায়, জোয়ারের পানিতে ভাসছে কৃষকের জমি
মেহেদি হাসান নয়ন, বাগেরহাট : বাগেরহাটের ফকিরহাটে কাঠালতলা গ্রামে খালের পাড়ের ওয়াপদার মাটি কেটে ব্যাক্তিমালিকানাধীন ইটভাটায় নেয়ার ফলে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে দরিদ্র কৃষকের ফসলি জমি ও মাছের ঘের। আর এতে ক্ষতি প্রায় দেড় কোটি টাকা। জানা যায় ফকিরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী ওয়াপদার মাটি তার নিজের ইট ভাটায় নিয়ে যায়। আর স্থানীয়রা বাঁধা দিলে কোন ক্ষতি হবেনা বলে আশ্বস্ত করে বাগিয়ে নেন মাটি। কিন্তু নতুন খননকৃত খালে জোয়ারের পানি আসা মাত্রই তলিয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা ফসলী জমি। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়।ধানের ক্ষেত মাজা সমান পানিতে ভরে গেছে জোয়ার আসার সাথে সাথেই। আর জমির এমন পরিস্থিতি দেখে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সদর ইউনিয়নের কাঠালতলা গ্রামের মৃতঃ আফজাল হোসেনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম।ঋণের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ২ বিঘা জমিতে ধান ও মাছ চাষ চাষ করেন তিনি। আশা ছিল ভাল ফলনে ফিরবে সুদিন কিন্তু মোহাম্মাদ আলী চেয়ারম্যানের খামখেয়ালী পণার শিকার হয়ে নির্বাক হয়ে যান তিনি। এদিকে একই এলাকার শেখ নওশের আলীর ৬ বিঘার ৪টা মাছের ঘেরও তলিয়ে যায়।আর এতে তার ক্ষতি হয় প্রায় ৫ -৬ লাখ টাকা,নুরুল আমিন এর ১২ বিঘা ঘের ও ফসলী জমিও তলিয়ে যায় জোয়ারের পানি তাতে তার ক্ষতি প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা, শেখ আয়ুব আলী’র ৪ বিঘা ঘের ও ফসলী জমি তলিয়ে গিয়ে ক্ষতি প্রায় ২ লাখ টাকা, ওমর আলীর ও ক্ষতি হয় ১ লাখ টাকা,শেখ আমানুর রহমানের ৬টা ঘের ও ফসলী জমি তলিয়ে গিয়ে ক্ষতি হয় প্রায় ১৪ লাখ টাকা। একজন দুইজন নই।আনুমানিক প্রায় ১০০-১৩০ জনের ৩০০ বিঘা জমি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। আর এই ৩০০ বিঘার ভিতর ধানের জমি ও ঘের, পুকুর, বাগান বাড়ি, নারকল সুপারি গাছ ও বরই বাগান সহ নানা রকম গাছ গাছ গাছালির ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। আর এই ভৈরব নদীর জোয়ারের পানি ঢুকার ফলে প্রায় আনুমানিক দেড় কোটি টাকার ক্ষয় খতি সাধিত হয় বলে দাবী স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্থদের। এর আগেও এই মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে গরিবের টাকা আত্বসাৎ সহ একাধিক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এই মোহাম্মদ আলী একের পর এক অপরাধ করেও বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে কোন ক্ষমতার বলে এলাকা বাসী জানতে চাই?
এবিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ ও দায়ের করেন। ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। যত দ্রুত সম্ভব সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অত্যাচারী মোহাম্মদ আলীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক কৃষক এবং দিনমজুরের মুখে ফিরে আসুক হাসি এমনটায় প্রত্যাশা সকলেন।
(ঊষার আলো-এমএনএস)