UsharAlo logo
সোমবার, ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফার্নিচারের মেশিন চুরির অভিযোগ তুলে দৌলতপুরে কলেজ শিক্ষার্থীকে হত্যা

koushikkln
জুলাই ১, ২০২২ ১১:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মামলার অভিযুক্ত আসামী গ্রেফতার ১, পলাতক ১ 

উষার আলো প্রতিবেদক : নগরীর দৌলতপুরস্থ পাবলা সাহাপাড়া এলাকার ফার্নিচারের মেশিন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ তৌহিদুন্নবীর ছেলে রায়েরমহল কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ তাহমিদুন্নবী তাহসিন (২২) এর হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা আজ ১ জুলাই (শুক্রবার) দুপুরে দেয়ানা পাখির মোড়ের নুর মোহাম্মাদ ইমামের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃতঃ আজিজ মোল্লার পুত্র মোঃ পলাশ মোল্লা (৪০) ও একই এলাকার বাসিন্দা আসমার বাড়ির ভাড়াটিয়া নাসির মোঃ নাসির মোল্লার পুত্র মোঃ পিয়াল মোল্লা (২২) এর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় তাওমিদুন্নবীর মা-বাবা। পরিবারের সদস্যরা কোনভাবেই এই নির্মম হত্যা ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না। এলাকাবাসীও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।

স্থানীয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তাহসিনকে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য দেখা গেছে। ঘাতক পলাশ মোল্লা তাকে বাটল (ধারালো কাঠকাটা যন্ত্র) দিয়ে একাধিক বার আঘাত করে। 

গ্রেফতার হওয়া পিয়াল মোল্লা – ঊষার আলো

পুলিশ জানায়, ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) দুপুরে দৌলতপুরস্থ পাবলা সাহাপাড়া এলাকার মোঃ পলাশ মোল্লার দোকানের ফার্নিচারের মেশিন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোকান মালিক মোঃ পলাশ মোল্লা ও মোঃ পিয়াল মোল্লার সাথে তাহমিদুলের কথা কাটাকাটির এই পর্যায়ে আসামীরা তাহমিদুলকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। এতে তাহমিদুল গুরুতর জখম হয়। অতঃপর গুরুতর জখম অবস্থায় ভিকটিককে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। মুমুর্ষ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছে পিয়াল মোল্লা (২২) কে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দিবাগত গভীর রাতে খুমেক হাসপাতালে কলেজ ছাত্র তাহমিদুন্নবী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

ভিকটিমের পিতা প্রবাহকে জানান, ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টার দিকে পাবলা সাহাপাড়া মোড় এলাকার কাঠ মিস্ত্রি পলাশ ও পিয়াল আমার ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই ঘটনাস্থলে আমার ছেলের সাথে ফার্নিচারের মেশিন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামী পলাশ ও পিয়াল হাতে থাকা ধারালো বাটাল দিয়ে আমার ছেলের মাথায় বাম পাশের ভুরুর উপরে, মুখের বাম পাশে, ঘারের পিছনে, বুকের বাম পাশে, পেটের বাম পাশে, ডান হাতের কনুয়ের নীচে হত্যার উদ্দেশে এলাপাতারি কোপাতে থাকে। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আমার ছেলেকে উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমার ছেলে খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুবরণ করে।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার দিনেই ঘটনায় জড়িত থাকা আসামী পিয়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ভিকটিমের আশঙ্কাজনক অবস্থা থাকার পর রাতে তার মৃত্যুর খবরে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় এবং ভিকটিমের সুরাতহাল সম্পন্ন করে, ময়না তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে ভিকটিমের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করি। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় দুই এজাহার নামীয় আসামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার দিনই এজহার নামীয় আসামী পিয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে বিজ্ঞ আলাদতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর আসামী মোঃ পলাশ মোল্লা পালাতক রয়েছে, তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এবিষয়ে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, ভিকটিমের হত্যার ঘটনায় তার পিতা শুক্রবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট থানায় দুই জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার জড়িত এজাহার নামীয় এক আসামীকে ইতিপূর্বে গ্রেফতার করা হয়েছে, অপর আসামীকে গ্রেফতারের ব্যাপারে জোরদার প্রচেষ্টা অব্যহত আছে। কি কারণে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পাবলা সাহাপাড়া এলাকার মোঃ পলাশ মোল্লার দোকানের ফার্নিচারের মেশিন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে আমার ধারণা।