ঊষার আলো ডেস্ক : উৎপাদন বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকলের মধ্যে (খুলনার খালিশপুর ও দৌলতপুর জুটমিল, চট্টগ্রামের কেএফডি, আর আর এবং সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিল) ৫টি জুটমিলের শ্রমিকদের ১লা জুলাই ২০১৫ এর প্রাপ্য বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির উদ্যোগে ১৭ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল ৪টায় খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের পিপলস গোল চত্তর থেকে খোঁড়া মিছিল শুরু হয়ে নতুন রাস্তা ঘুরে গোল চত্বরে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন মনি এবং সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, দৌলতপুর জুট মিলস কারখানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, যশোর-খুলনা আঞ্চলিক বদলী কমিটির আহবায়ক মোঃ ইলিয়াস হোসেন, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার, শ্রমিকনেতা মোঃ নূরুল ইসলাম, ছাত্র ফেডারেশন খুলনা মহানগর আহবায়ক আল আমিন শেখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহামরী করোনার কারণে ২০২০ সালের ৩০ জুন পাটকল বন্ধের পর থেকে পাটকল শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। কর্মহীন শ্রমিকরা আজ দারুণভাবে অবহেলিত। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার অভুক্ত এই শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। দীর্ঘ ১৭ মাস মজুরী না পেয়ে শ্রমিকদের পেটে ভাত নেই। স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ক্ষুধার যণÍ্রণায় বহু শ্রমিক অনৈতিক পেশায় যুক্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে শ্রমিক-কৃষকসহ সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। শ্রমিক-কৃষকরা যাতে ধুঁকে ধুঁকে মরে সেই ব্যবস্থা করছে সরকার। অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু না করলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
বক্তারা বলেন, সরকার হাজার-হাজার শ্রমিকের পেটে লাথি মেরে রাতের অন্ধকারে ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। পাটখাতে লোকসান করে সরকার, চুরি-দুর্নীতি-লুটপাট করে আমলা-মন্ত্রীরা। অথচ যে পাটকল শ্রমিকরা ৫০ বছরে লাভ তৈরি করেছে, রাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল রেখেছে, সেই শ্রমিকরা আজ বেতন পাচ্ছে না, নিয়মিত বেতন পাচ্ছে লুটপাটকারী আমলা-মন্ত্রী-বিজেএমসির কর্মকর্তারা। বক্তারা চাকুরীহারা ও ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি জুটমিলের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা মজুরী কমিশন, ২০১৫ অনুযায়ী প্রাপ্য বেতন, বকেয়া ৬টি বিলসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধের দাবি জানান।