UsharAlo logo
শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বকেয়া পরিশোধে অর্থ ছাড় : পাটকলের বদলী শ্রমিক পরিবারে আনন্দ

koushikkln
জুলাই ১৬, ২০২১ ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা-যশোর অঞ্চলের পাঁচটি পাটকলের বদলী শ্রমিকদের সমুুদয় বকেয়া পরিশোধের জন্য সরকার ২১২ কোটি টাকা অর্থ ছাড় করেছে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের টাকা ছাড় দিয়েছে। ঈদের আগেই তারা বকেয়া টাকা পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন খুলনা-যশোর আঞ্চলিক বদলী শ্রমিক সংগঠনের আহাবায়ক ইলিয়াস হোসেন।
তিনি বলেন, আগামী সোমবার নাগাদ শ্রমিকরা টাকা পাবেন। এমনই খবর মিল কর্তৃপক্ষ তাদের দিয়েছেন। তবে এ টাকা পাওয়ার পর একটি মহল নানা অজুহাতে চাঁদাবাজির কৌশল হাতে নিয়েছিল। এমন খবর পাওয়ার পর তিনি শ্রমিকদেও বলে দিয়েছেন, বকেয়া টাকা পাওয়ার পর কাউকে কোন টাকা চাঁদা দেয়া যাবে না। কেউ টাকা চাইলে বদলী শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের জানাতে তিনি সকল শ্রমিককে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। এ খবরে খালিশপুরে বদলী শ্রমিক পরিবারের আনন্দের জোয়ার বইছে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের বদলী শ্রমিক শাবনাজ বেগম জানান, খুবই কস্ট করে দিন চলছিল। বকেয়া টাকা দেয়ার খবরে তিনিসহ সকল শ্রমিকরা আনন্দিত।
কারাবরণকারী শ্রমিক নেতা নুর ইসলাম বলেন, অনেক আগেই মিল বন্ধ হলেও বদলী শ্রমিকরা তাদের বকেয়া পায়নি। এই নিয়ে তারা অনেক আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের মুখে সরকার তাদের বকেয়া টাকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এ টাকা যেন শ্রমিকরা ঈদের আগে পায় এ দাবি তার।
প্লাটিনাম মিলের প্রকল্প প্রধান মুরাদ হোসেন বলেন, তার মিলে ৬হাজার ২৬৫ জন বদলী শ্রমিক রয়েছে। তাদেও বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। তবে অনেকের নামের ভূলসহ নানা জটিলতার কারণে বিজেএমসি তাদের টাকা দিবে না। এমনই অভিযোগে অনেকে বাদ পড়েছে। এসব বাদ দিয়ে বিজেএমসি তাদেও মিলের বিপরিতে প্রায় ১৫ কোটি টাাক ছাড় দিচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে টাকা অর্থ মন্ত্রণারয় ছাড় দিয়েছে। এখন বিজেএমসিতে আসবে। সেখান থেকে স্ব স্ব মিলে টাকা আসবে। তারপর তারা বলতে পারবে কবে নাগাদ শ্রমিকরা টাকা পাবেন। তিনি বলেন, শ্রমিকরা ১৬ টাকা থেকে শুরু করে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে।
উল্লেখ্য, বদলী শ্রমিকদের মজুরি কমিশনের এরিয়া ও ২০১৯ সালের ছয় সপ্তাহের বকেয়া মজুরি রয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে মিলের সকল উৎপাদন কার্যক্রম গত ৩০/০৬/২০২০ তারিখ বন্ধ হয় কিন্তু তারা বকেয়া পায়নি। কর্তৃপক্ষ এসব পাওনাদির টাকা নগদে (ব্যাংকের মাধ্যমে) পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন-বিজেএমসির অধীন বন্ধঘোষিত মিলগুলোর বদলি শ্রমিকদের (২১ হাজার ৫৫২ জন) বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য ২১২ কোটি আট লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পাঠানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজেএমসির বন্ধঘোষিত পাটকলগুলোর বদলি শ্রমিকদের জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১৫ ও জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১০-এর পার্থক্যজনিত বকেয়া পাওনা পরিশোধের এ অর্থ দেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় এ অর্থ বরাদ্দ দেয়। এ অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় ‘পরিচালন ঋণ’ হিসেবে এই ২১২ কোটি আট লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। টাকাটা ২০২১-২২ অর্থবছরের বিজেএমসির অধীন ১৮টি মিলের ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।