UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিতলমারীতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী,সন্তানসহ ৩ জনকে মারপিট

pial
জুন ৯, ২০২২ ৪:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাগেরহাট প্রতিনিধি : পাওনা টাকা আদায় নিয়ে বিরোধের জের ধরে বাগেরহাটের চিতলামারী উপজেলার হিজলা গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত খানের বাড়ীতে হামলা করা হয়েছে।

প্রকাশ্য দিবালোকে হামলাকারিরা মরহুম মুক্তিযোদ্ধার বৃদ্দা স্ত্রী শাহিদা বেগম, ছেলে অলিয়ার রহমান ও ছেলের স্ত্রী হামিদা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে। মু্িক্তযোদ্ধার স্ত্রী শাহিদা বেগমকে হামলাকারিরা ধরে নারকেল গাছের সাথে আছাড় দিয়ে আহত করে।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের স্ত্রী চিতলমারি থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় চাইলেও থানার ওসি হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে ওই ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ করেছে। অনুরুপ অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবরও করেছেন। পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেয়ায় চিতলমারী থানার ওসি এইচএম কামরুজ্জামান আরো ক্ষিপ্ত হয়ে থানা অভ্যান্তরে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সন্তানকে বের করে দেয়। এমতাবস্থায় বিধবা মাতা ও স্ত্রীকে মারপিট করার বিচার দাবী করে মুক্তিযোদ্ধার সন্ত্রান মোঃ অলিয়ার রহমান খান একজন আইনজীবির সহযোগিতা নিয়ে চিতলমারী থানার ওসিসহ হামলাকারিদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনার প্রর্ত্যক্ষদশীরা ও বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগে প্রকাশ, স্থানীয় একটি এনজিওর ঋনের কিস্তি আদায় নিয়ে জটিলতার এক পর্যায়ে চিতলমারী উপজেলার হিজলা এলাকার কাজী পরিবারের সাথে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরোধ হয়। গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ও সন্ধ্যায় পৃথকভাবে এলাকার কাজী কামাল, জামাল, রেশমা বেগম নওশের আলী ও সাব্বির কাজীসহ আরো অনেকে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত খানের বাড়ীতে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, সন্তান ও ছেলের স্ত্রীকে মারপিটকরাসহ শ্লীলতাহানী ঘটায়। এ ঘটনায় পরের দিন চিতলমারী থানায় অভিযোগ দিতে গেলে থানাও ওসি একটি জিডি নিয়ে ঘটনা বিষয়ে এসআই ইউসুফ কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এসআই ইউসুফ তদন্তে গেলে তার সামনেই আসামীরা ওলিয়ার ও তার মায়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। থানা পুলিশ ঘটনাটি বেশী গুরুত্ব না দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা শাহিদা বেগম গত ৮ মে বাগেরহাট পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক বরাবরে বিচার দাবীতে আবেদন করেন। পুলিশ সুপার আবেদনটি গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন কারীকে পুনঃরায় চিতলমারী থানায় পাঠায়। এতে থানার ওসি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে থানার ওসি বিষয়টি মিমাংসা করে দিবে বলে গত ২৮ মে থানায় ডেকে পাঠায়। সে অনুযায়ী বৃদ্ধা শাহীদা বেগমসহ তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী ৫ মাস বয়সের ২ টি যমজ সন্তান নিয়ে থানায় গেলে ওসি সাহেব তাদের কে লাঞ্ছিত করে থানা থেকে বের করে দেয়।

অভিযোগকারী ওলিয়ার রহমান খান বলেন, প্রতিপক্ষরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশ ম্যানেজ করে পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানী করছে। উপায়ন্তর না পেয়ে আমরা বাগেরহাটে এসে একজন আইনজীবির সহায়তায় চিতলমারী থানার ওসি এইচএম কামরুজ্জামানসহ প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে গত ৩ জুন সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগ দাখিল করতে গিয়েও পারি নাই।

সর্বশেষ গত ৬ জুন আদালত প্রাঙ্গনে কোর্ট পুলিশসহ আসামী পক্ষের লোকেরা আমাকে লাঞ্ছিত করে বের করে দেয়। ফলে আমিই আদালতেও নালিশি অভিযোগ দাখিল করতে পারি নাই। আজ বড় অসহায় অবস্থায় পড়ে বৃদ্ধ মাতা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছি বলে ওলিয়ার রহমান খান এ প্রতিবেদক কে জানান।

মরহুম মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন খানের স্ত্রী শাহীদা বেগম বলেন, এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে একটু দেরী হওয়ায় এরুপ অত্যাচার- নির্যাতন করার ঘটনার বিচার এখন কার কাছে চাইব। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হয়েও থানা পুলিশের সহযোগিতা পেলাম না। এমনকি আদালতে মামলা করতে পারলাম না। তবে এ ঘটনা বিষয়ে প্রতিপক্ষদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি এবং চিতলমারী থানার ওসিরও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

(ঊষার আলো-এফএসপি)