UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটে নৌ-পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে মাদক উদ্ধারের নামে হয়রানির অভিযোগ

koushikkln
জুলাই ১৮, ২০২২ ২:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার পল্লীতে মাদক দ্রব্য উদ্ধারের কতিথ অজুহাতে বসতবাড়ীতে প্রবেশ করে এক গৃহবধূকে মারপিট, শ্লীলতাহানি ও বসত ঘর তছনছ করার সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে নৌ-পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে। আর ঘটনাটি ঘঠেছে শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনির ঘোল বটতলা এলাকায়। এ বিষয়ে মোংলার জয়মনি নৌ-পুলিশের ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে মিরাজুল খান ওরফে বাবুসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে বাগেরহাট পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত গৃহবধুর শ^শুর মো নুর আলী শেখ।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ ও তার শ^শুর নুর আলী শেখ জানান, জয়মনি এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেক খানের ছেলে মিরাজুল খান ওরফে বাবু ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা-মামলাসহ ভয়ভীতি দেখায়। গত ৫ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জয়মনির বটতলা এলাকার দিন মজুর আঃ রাজ্জাক শেখের ছেলে তামিম শেখকে পথরোধসহ মারধর করে এবং তার কাছ থেকে জোর পূর্বক ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার ব্যবহৃত নতুন একটি মোটর সাইকেলও কেড়ে নেয় বাবু। বিষয়টি তামিম তার পরিবারের সদস্যদের জানালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেনসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। এতে বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়। গত ১৪ জুলাই রাত পৌনে ১২টার দিকে আঃ রাজ্জাক শেখ ও তামিম শেখের বাড়িতে বাবু খান ও তার লোকজন প্রবেশ করে। এ সময় রাজ্জাক শেখের স্ত্রী বিষয়টি বুঝতে পেরে ডাক-চিৎকার শুরু করলে বাবুসহ তার লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই রাতেই ঘটনাটি মোংলা থানা, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের অবহিত করেন রাজ্জাক ও তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ নৌ-পুলিশের ওসিসহ ১০-১৫ জনের একদল পুলিশ রাজ্জাকের বাড়ি ঘেরাও করে। রাজ্জাক বাড়িতে না থাকায় ইয়াবা ও মাদক উদ্ধারের নামে ঘরে ঢুকে ওই গৃহবধূকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর শুরু করে এবং ঘরে থাকা আসবাবপত্র মূল্যবান মালামাল ভাঙচুর করে নৌপুলিশের সদস্যরা। এ সময় ওই গৃহবধূর ডাক-চিৎকার দিলে পুত্রবধূকে বাঁচাতে শাশুড়ি রহিমা বেগম, শ্বশুর নুর আলী শেখসহ অন্যরা এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করা হয়। এ সময় ওই গৃহবধুর পরনের পোশাক টেনেহেঁচড়ে শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করা হয় বলে গৃহবধু অভিযোগ করেন নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে বসতবাড়িতে তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে অহেতুক গবির লোকের হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় এলাকাবাসীর তোপের মুখে দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান নৌ পুলিশের ওসিসহ অন্য সদস্যরা।

এ ব্যাপারে বাবু খান সাংবাদিকদের জানান, আমি টাকা পাব তাই গাড়ি আটকে রেখেছি। যা চেয়ারম্যান জানেন। তবে অন্য সব অভিযোগ মিথ্যা বলে জানান তিনি। স্থানীয় চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন জানান, তামিমের কাছে বাবু টাকা পাবে বলে আমাকে জানিয়েছে, তবে মোটরসাইকেলের ব্যাপারে আমার জানা নেই।

চাঁদপাই নৌ-পুলিশের ওসি মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়ীতে অভিযানে যাওয়া হয়। তবে কোনো মাদক দ্রব্য পাওয়া যায়নি। আমাদের অভিযানে খবর পেয়ে তারা মাদকগুলো লুকিয়ে ফেলার কারণেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আর ওই গৃহবধুর অভিযোগ সঠিক নয়।