ঊষার আলো রিপোর্ট: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) সাংস্কৃতিক ক্রীড়া পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এক প্রভাবশালী সিবিএ নেতার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট নির্বাচনের খরচ জোগাতে বাপেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদার ও ঢাকার বাইরের ৮ অফিস থেকে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচিত হতে পারলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি করিয়ে দেবে বলেও কয়েক কোটি টাকার ঘুস আদায় চলছে।
কর্মচারীদের অভিযোগ, তাকে ভোট না দিলে চাকরিচ্যুত, বিভিন্ন মামলার আসামি করবেন এবং ডাম্পিং পোস্টিং দেবেন বলেও ওই নেতা হুমকি দিচ্ছেন। বর্তমানে বাপেক্সের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করা ঠিকাদারদেরও মোটা অঙ্কের চাঁদা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে এ সিন্ডিকেট। বিদেশি ঠিকাদাররা বিষয়টি বাপেক্স কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও ফল পাচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, চাঁদা না দিলে সিন্ডিকেট নেতারা তাদের কাজ বন্ধ করে দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় চরম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাপেক্সের কূপ খননসহ শত শত উন্নয়ন কাজ।
বাপেক্সের একাধিক সূত্র জানায়, এ সিবিএ নেতার চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারাও। কোনো কারণ ছাড়াই সময়-অসময়ে তারা চাঁদাবাজি করে। কাওরান বাজারের বাপেক্স ভবনের আশপাশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও এ সিন্ডিকেট প্রতিমাসে কোটি টাকার চাঁদা ওঠাচ্ছে। কর্মচারীদের কেউ মাসিক চাঁদা দিতে রাজি না হলে তাকে বদলি অথবা শাস্তির ভয় দেখানো হয়। এ নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ একাধিক বিভাগীয় মামলা আছে। এসব মামলা দীর্ঘদিন ধরে তদন্তাধীন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, কর্মচারী শ্রমিক লীগ সিবিএ, রেজিস্ট্রেশন নং ২০১৬-এর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম একজন হাইব্রিড শ্রমিক লীগ। বাপেক্স কর্মচারী ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন নং-১৮৮৪, যা জাতীয় শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত। তিনি ওই কমিটির একজন সাবেক প্রচার সম্পাদক। এছাড়া এ সিবিএ নেতা বাপেক্স কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়ে ধানমন্ডির ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কাউন্সিল হয়েছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আইন অনুযায়ী এটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
এদিকে শক্তিশালী সিবিএ থাকার পরও নতুন করে সাংস্কৃতিক ক্রীড়া পরিষদ গঠন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটিও চাঁদাবাজির অন্যতম কৌশল। জানা যায়, মাজহারুল ইসলামও এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রার্থী হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তিনি সিবিএ নেতা। কিন্তু সাংস্কৃতিক ক্রীড়া পরিষদ একটি সর্বজনীন সংগঠন। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই ভোটার। এজন্য তিনি এখানে প্রার্থী হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট গঠন, চাঁদাবাজি, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা। চাঁদাবাজ হলে আমি কীভাবে সর্বোচ্চ ভোটে সিবিএ নেতা হয়েছি। উলটো চাঁবাদাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, কর্মচারীদের হয়রানি বন্ধ করেছি।
দুদক সূত্রে জানা যায়, এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বাপেক্সের একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
ঊষার আলো-এসএ