প্রতি বছরের মতো এবারও শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে খুলনার শিরোমণি বাইপাস সড়ক ও ডাকাতিয়া বিলে বেড়েছে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা। শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসছে অতিথি পাখির দল, যার কিছু আসছে খুলনা অঞ্চলেও। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ আর অবাধ বিচরণ বিমোহিত করছে এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের। কিন্তু শিকারির থাবা প্রতিনিয়ত এ কলকাকলি থামিয়ে দিতে সক্রিয়।ইতোমধ্যে এ বিলে বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি এসেছে। এছাড়া, বেশ কিছু বিপন্ন প্রায় ও বিরল প্রজাতির দেশিয় পাখি বছর জুড়েই এ বিলে অবস্থান নেয়।
দেশীয় প্রজাতির এসব পাখির জন্য এ বিল ও আশপাশ এলাকা নিরাপদ আবাস হিসেবেই চিহ্নিত।এ বিলে গত কয়েক বছর ধরে শীত মৌসুমে অতিথি পাখিরা আসে। শীত কমে গেলেও অনেক পাখিই দীর্ঘদিন বিল ডাকাতিয়ায় থেকে যায়।এখন পর্যন্ত ডাকাতিয়া বিলে অবস্থান নেওয়া অতিথি পাখির মধ্যে বেশি দেখা গিয়েছে বড় পানকৌড়ি, পাতি-কুট, গিয়িরা হাঁস, তিলা হাঁস প্রভৃতি।
অতিথি পাখি সম্পর্কে স্থানীয় গাজী মামুন বলেন , নভেম্বরের শেষ থেকেই অপরূপ সুন্দর এ বিলে আসতে শুরু করে অতিথি পাখির ঝাঁক। প্রতিদিন বিচিত্র রঙের অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত বিলটি।বিল পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অতিথি পাখির মধ্যে পানকৌড়ি, কাস্তেচড়া, কানিবক, ধুপনিবক, পাতিসরালী, ভুতিহাঁসসহ আরও অনেক নামের পাখি বিলে আসে।শিরোমনি এলাকার নজরুল মোল্লা জানান, দেশের পাখির মধ্যে বালি হাঁস, পাতি সরালি, বেগুনি কালিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস বিভিন্ন এলাকা থেকে বিলে আসছে। পাখিগুলো বিলে ও বিলের চারপাশে কচুরিপানার মধ্যে অবস্থান করছে। শিরোমনি ডাকাতিয়া বিল এখন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত।
কৃষক সালাম জোয়াদ্দার জানান, পাখি শিকারিরা দিনের বেলা গরু-মহিষ চড়ানো, ধান চাষ, হাঁস চড়ানোর নামে ছদ্মবেশে হাওরে ঘোরাঘুরি করে। এ সময় সুযোগ বুঝে বিষটোপের মাধ্যমে পাখি ধরে তারা পালিয়ে যায়। আর সন্ধ্যার পর থেকেই ১০-১২ জন সংঘবদ্ধ হয়ে পাখি শিকারে নামে। তারা জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে গভীর রাত পর্যন্ত। ভোর হওয়ার আগেই তারা বিল থেকে চলে যায়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, দিনরাত পাখিদের কিচিরমিচির আর কলতানে মুখরিত বিলের দৃশ্য দেখে পাখিপ্রেমিদের মন সহজেই জুড়িয়ে যাবে।