UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টির ভোগান্তিতে ঈদ আনন্দ মাটি

usharalodesk
জুলাই ২, ২০২৩ ২:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : মধ্য আষাঢ়ে ঈদুল আজহা পালিত হওয়ায় অনেকেরই ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। কারণ ভরা বর্ষায় ঈদযাত্রা থেকে শুরু করে ঈদের দিন এবং পরের দুদিন মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এ কয়েকদিন ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশ ছিল বৃষ্টিস্নাত। টানা বৃষ্টিতে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। শনিবার দুপুরের পর মুষলধারের বৃষ্টিতে ঢাকার অধিকাংশ রাস্তা ও গলি ডুবে যায়। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ঈদের পর প্রথম কর্মদিবস ছিল শনিবার। এদিন গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে অনেকে ভোগান্তিতে পড়েন। ট্রেন, বাস ও লঞ্চ থেকে নেমে তারা বিড়ম্বনার শিকার হন। একদিকে বিরামহীন বৃষ্টি, অন্যদিকে ফাঁকা ঢাকায় ছিল গণপরিবহণের স্বল্পতা। অল্পসংখ্যক গণপরিবহণ থাকায় বেশি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশাচালকরা যাত্রীর পকেটে কেটেছে বেশি। সবমিলে ছুটি শেষে শহরে ফিরে অনেকে ভোগান্তির মুখে পড়েন। আবার বৃষ্টির কারণে অনেকে ঘর থেকে বেরই হতে পারেননি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) বিএমডির আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আষাঢ়ে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়াটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয়। ভারতের পাঞ্জাব থেকে শুরু করে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত এটি বিস্তৃত। ফলে গোটা অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াসংক্রান্ত বেসরকারি দ্য ওয়েদার চ্যানেল জানিয়েছে, আগামী ১০ দিন বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে আজ ও কাল বেশ বৃষ্টি হতে পারে। এরপর মঙ্গলবার কমতে পারে। বুধবার থেকে আবার বাড়তে পারে বৃষ্টি।

শনিবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিলসহ কয়েকটি সড়ক সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে-অধিকাংশ রাস্তাঘাট ফাঁকা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সড়কে গণপরিবহণের পরিমাণও কম। বৃষ্টির সময় কাউকে মার্কেটে আবার কাউকে দোকানপাটের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

পটুয়াখালী থেকে বিআরটিসি বাসে ঢাকায় ফেরেন মিরপুরের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের পর রাস্তায় যানবাহন কম থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তিনি বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েছেন। তিনি আরও জানান, ঈদের দিন সকাল ১০টার দিকে গ্রামেও বৃষ্টি হয়। এ কারণে পশু কুরবানি দিতে তাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

রাজধানীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অন্য সব বছরের তুলনায় ভালো ছিল। আগেভাগেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২৪ ঘণ্টায় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দেয়। সেই অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কুরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মাঠে নামেন। দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৯ হাজার কর্মী বর্জ্য অপসারণে কাজ করেন। কিন্তু এরপরও অলিগলিতে এখনো বর্জ্য রয়ে গেছে বলে অনেকেই ফোনে জানিয়েছে। তাদের একজন মামুন আহমেদ। তিনি জানান, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের প্রতিটি গলিতে এখনো বর্জ্য আছে।

ঈদের দিন বৃহস্পতিবার ভোরের দিকটি মোটামুটি শুষ্ক ছিল দেশের বেশিরভাগ এলাকা। এ কারণে অনেক স্থানে ঈদগাহে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ পড়তে পেরেছেন। কিন্তু দুপুরের পর খোলা মাঠে বা সড়কে পশু জবাই করতে গিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েন। গোশত কাটাকাটি অনেকটাই ঘরের মধ্যে করতে হয়েছে। ঈদের আগের দিনও বৃষ্টি ছিল। বিশেষ করে ঢাকায় ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। ওইদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

ঊষার আলো-এসএ