UsharAlo logo
শুক্রবার, ৩০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মধ্যবিত্তের ওপর করের খড়্গ বাড়ছে

ঊষার আলো রিপোর্ট
মে ২৯, ২০২৫ ১২:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আসছে বাজেটে আয়কর আদায়ে মধ্যবিত্তকে টার্গেট করছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথমবার রিটার্ন জমা দেবেন-এমন করদাতাদের জন্য বাজেটে সুখবর থাকলেও মধ্যবিত্ত শ্রেণির করহার দ্বিগুণ করা হচ্ছে। এতে করের চাপ বাড়বে। একই সঙ্গে অনেক মধ্যবিত্ত নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য সরকারি ট্রেজারি বিল কেনেন, সেখানেও উৎসে কর দ্বিগুণ করা হচ্ছে। অবশ্য কমানো হচ্ছে ধান, গম, আলু, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্যের স্থানীয় ঋণপত্রের উৎসে কর। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

বিদ্যমান কর কাঠামো অনুযায়ী, ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মহিলা করদাতাদের এই সীমা ৪ লাখ, প্রতিবন্ধীদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার এবং গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ লাখ টাকা। আয়করের বর্তমান স্ল্যাব অনুযায়ী, সাড়ে ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার মধ্যে বার্ষিক আয় থাকলে করদাতাদের ৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। পরবর্তী ৪ লাখ টাকার (মোট আয় সাড়ে ৮ লাখ টাকা) ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখের (মোট আয় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা) ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখের (মোট আয় সাড়ে ১৮ লাখ টাকা) ওপর ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখের (সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা) ওপর ২৫ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের (করযোগ্য আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা পার হলে) ওপর ৩০ শতাংশ হারে আয়কর ধার্য আছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। পরবর্তী স্ল্যাব এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হচ্ছে। অর্থাৎ পরবর্তী স্ল্যাব হবে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর সঙ্গে করহার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাধারণত মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয় এটি। আসছে বাজেটে স্ল্যাব পরিবর্তন ও করহার বাড়ানোয় মধ্যবিত্তের ওপর করের বোঝা বাড়বে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। এই আয়ের এক-তৃতীয়াংশ কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত। অর্থাৎ তাকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার ওপর আয়কর দিতে হয়। বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী বার্ষিক মোট আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা হলে ৫ শতাংশ এবং পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ হারে আয়কর প্রযোজ্য। সে হিসাবে করদাতার আয়করের পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার জন্য ৫ হাজার টাকা এবং পরবর্তী ৩০ হাজার টাকার জন্য ১০ শতাংশ হারে ৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ করদাতার প্রদেয় করের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮ হাজার টাকা।

আসছে বাজেটে করহার সংক্রান্ত পরিবর্তন আনা হচ্ছে এই করদাতাকে বাড়তি আড়াই হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। কারণ করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার পাশাপাশি করহার ৫ শতাংশের স্থলে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থাৎ করদাতার করযোগ্য আয় থাকছে এক লাখ ৫ হাজার টাকা (৪.৮০ লাখ টাকা-৩.৭৫ লাখ টাকা)। করহার ১০ শতাংশ করায় এই করদাতাকে তখন ১০ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর দিতে হবে। অবশ্য প্রথম রিটার্ন জমা দেবেন-এমন করদাতাদের জন্য সুখবর থাকছে। নতুন করদাতাদের আয়ভেদে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বিধান যুক্ত হচ্ছে আয়কর আইনে। মূলত নতুন করদাতাদের করভার লাঘব এবং করভীতি দূর করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেসব করদাতা প্রথমবার রিটার্ন জমা দেবে, কেবল তারা এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে যে কোনো অঙ্কের কর দিতে পারবে।

সূত্র জানায়, বাজেটে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে স্থানীয় ঋণপত্রের কমিশনের উৎসে কর কমিয়ে অর্ধেক করা হচ্ছে। ধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, আদা, হলুদ, শুকনো মরিচ, ডাল, ভুট্টা, মোটা আটা, আটা, লবণ, চিনি, ভোজ্যতেল, কালো গোলমরিচ, দারুচিনি, বাদাম, লবঙ্গ, খেজুর, ক্যাসিয়া পাতা, কম্পিউটার ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ ও সব ধরনের ফল ক্রয়ের জন্য স্থানীয় ঋণপত্রের কমিশনের ওপর উৎসে এক শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করা হচ্ছে।

ঊষার আলো-এসএ