ঊষার আলো ডেস্ক : গত এক সপ্তাহ খুলনায় ফ্যাসিবাদী শাসক গোষ্ঠীর লাগাতার হামলা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশের উপস্থিতিতে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে একজন যুগ্ম আহবায়কসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে। পরিকল্পিতভাবে বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশস্থলে পাল্টা কর্মসূচি আহবান করে ভন্ডুল করার চেষ্টা করা হয়েছে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রতিটি কর্মসূচি পালন করেছে। এতে দিশেহারা হয়ে শাসক দলীয় ক্যাডাররা বিএনপি অফিস ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা, হুমকি প্রদান ও মহড়া প্রদর্শন করছে। নগরীর দৌলতপুর, খালিশপুর ও জেলার দিঘলিয়া উপজেলায় হামলা নির্যাতনের ভয়াবহ রূপ প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। হামলার ঘটনায় মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে খালিশপুর, খানজাহান আলী ও দিঘলিয়া থানায়।
১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষির্কীতে খুলনার রাজপথ দখলে রেখে এ সকল হামলা, মামলা, নির্যাতনের ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানাতে চায় বিএনপি। স্মরণকালের বৃহত্তম গণজমায়েত সৃষ্টি করে রাজপথে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হবে নগরীতে। বিএনপি এবং সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মীর জমায়েতের লক্ষ্যে প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত এবং সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিশাল র্যালী অনুষ্ঠিত হবে।
এ উপলক্ষে শনিবার সকালে কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর বিএনপির প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের আরও একটি প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার সভাপতির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা বলেছেন, নানা বাঁধা বিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে খুলনার প্রতিটি থানায় থানায় বিএনপি সফল ভাবে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। জ¦ালানি তেল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসুচিতে শুধু দলীয় কর্মীরাই নন, সাধারণ জনগনও সম্পৃক্ত হয়েছে। বিষয়টি আচ করতে পেরে শাসক দল আওয়ামী লীগে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। টিকে থাকার জন্য বিরোধী নেতাকর্মীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করতে বেপরোয়া হামলা নির্যাতন শুরু করেছে। এটি ফ্যাসিবাদী শাসকের অভিন্ন চরিত্র। তবে খুলনা বিএনপির নেতাকর্মীরা এতে ভীত নয়। আমরা রাজপথ দখলে রেখে প্রতিবাদ জানাবো এবং প্রয়োজনে আরও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলে হামলাকারীদের মোকাবেলা করবো।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হবেনা। তার পরিবর্তে সারা দেশে শাসক দলীয় ক্যাডারদের হামলা ও পেটেয়া পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহতদের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল হবে রাজপথে। সেখানে স্থান পাবে আহত রক্তাক্ত নেতাকর্মীদের ছবি। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগকৃত দলীয় কার্যালয়ের চিত্র। মিছিলের শ্লোগানে স্থান পাবে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের দাবি। হামলাকারী অপশক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি। এরআগে ভোরে সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
এদিকে প্রস্ততি সভা থেকে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সহ যশোরের বেশ কয়েকজন শীর্ষ বিএনপি নেতার বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার তিব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের প্রতি দাবি জানানো হয়।
সভা থেকে দৌলতপুর থানা মহিলা দলের সাবেক নেত্রী তাহমিনা খাতুনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
সভা থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত মহানগর বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল হাসান দুলুর সুস্থতা কামনা করা হয়।
সভা থেকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসুচি সফল করতে পাঁচটি উপ কমিটি গঠন করা হয়।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন স ম আব্দুর রহমান, সৈয়দা রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, মাহবুব হাাসন পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, রোবায়েত হোসেন বাবু, এহতেশামুল হক শাওন, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, মিজানুর রহমান মিলটন, মুজিবর রহমান, আজিজা খানম এলিজা, ইঞ্জিনিয়ার নুর ইসলাম বাচ্চু, অ্যাড. কানিজ ফাতেমা আমিন, আক্তারুজ্জামান সজীব, ইসতিয়াক আহমেদ ইসতি, মোঃ তাজিম বিশ^াস প্রমুখ।